১৯৫০ সালের পর সম্প্রতি পানামা খাল সবচেয়ে বেশি শুষ্ক হয়ে পড়েছিল। তখনই বোঝা গিয়েছিল, কিছু বিশেষত্ব রয়েছে বছরটির। ২০২৩ সাল ২০১৬ সালকে হারিয়ে বিশ্বের উষ্ণতম বছরে পরিণত হতে যাচ্ছে! চলতি বছরটি সবদিক থেকেই মারাত্মক। বছরজুড়ে মারাত্মক তাপপ্রবাহ, প্রবল বৃষ্টি, ভয়ংকর বন্যা এবং ভয়াবহ দাবানল। এবার দেখার ঠান্ডা কতটা পড়ে। মারণঠান্ডা পড়ে কিনা, এবং তাতে মানুষের মৃত্যু হয় কিনা, হলে কত। তবে তার আগে, সবচেয়ে উষ্ণতম বছরের মুকুট ২০২৩ সালেরই হবে বলে আপাতত ধারণা করা হচ্ছে।
চলতি বছরের অক্টোবরও ছিল ভালো গরম। সেই তীব্র গরমের পরেই ২০২৩ সালকে উষ্ণতম বছর বলে এক সংবাদসংস্থার তরফে উল্লেখ করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু পরিবর্তন পরিষেবা অনুসারে, এ বছর বায়ুর বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা অক্টোবর ২০১৯-এর আগের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার তুলনায় ০.৪ সেন্টিগ্রেড বেশি ছিল!
কেন এরকম হচ্ছে?
জানা গিয়েছে, কার্বন নির্গমন এবং এল নিনোর ঘটনাই প্রকৃত কারণ। এসবের জন্যই চলতি বছরের অক্টোবর ছিল রেকর্ড উষ্ণ। গবেষকরা বলছেন, সম্ভবত ২০২৪ সাল পর্যন্ত এইরকম গরম অব্যাহত থাকবে। তবে ২০২৩ সাল যে আজ পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে উষ্ণতম সাল হতে চলেছে, এটা এখন মোটামুটি অনিবার্য। ২০২৩ সালের শেষ দুই মাসও তুলনায় উষ্ণই থাকবে।
চলতি বছরের অক্টোবর মাসের তাপমাত্রা এ বছরের গ্লোবাল তাপের রেকর্ডের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। এ বছরের জুলাই এতই উষ্ণ ছিল যে, এটি গত ১ লক্ষ ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ মাস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। এ বছরের সেপ্টেম্বরের গড় তাপমাত্রাও আগের রেকর্ডটি ভেঙে দিয়েছে।
‘কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসে’র মতে, অক্টোবর মাস সেপ্টেম্বরের মতো অস্বাভাবিকভাবে গরম ছিল না বটে, তা সত্ত্বেও এই মাসের তাপমাত্রা তার আগের রেকর্ড ভেঙেছে। মাসটি প্রাক-শিল্প পরিবেশের তাপমাত্রার গড়ের তুলনায় ১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ ছিল।
এক জলবায়ুবিজ্ঞানী বলেছেন– এ বছরে যে গরম পড়েছে তা কমার কোনও লক্ষণ তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন না। সব তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁরা কার্যত নিশ্চিত যে, ২০২৩ সালটি সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হবে। আর এই অক্টোবরের তাপমাত্রা বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ছিল।
ব্রিটেনে তাপমাত্রা গড়ে প্রায় ১ সেন্টিগ্রেড বেশি ছিল। দক্ষিণ ইংল্যান্ডের উষ্ণতম তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ১.৭ সেন্টিগ্রেড বেশি ছিল। ইতালিতে অক্টোবরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ সেন্টিগ্রেডের বেশি ছিল। মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অংশও খরার কবলে পড়েছে। চলতি নভেম্বরে প্রথমবারের মতো ইউরোপ ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রার মুখোমুখি হয়েছিল!