home minister, Bangladesh Government, ব্যর্থ! নিরাপত্তা দিতে পারিনি, স্বীকার করে হিন্দুদের কাছে ক্ষমা চাইলেন বাংলাদেশের নয়া সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী

 ৫ আগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর থেকে বাংলাদেশে চরম অরাজকতা চলছে। গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ গ্রহণের পর সেটা কিছুটা কমলেও কোথাও কোথাও হামলা ও লুটের ঘটনা ঘটেই চলেছে। অভিযোগ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হিন্দুদেরই আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে। সেখানকার সংখ্যালঘু বিশেষত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের উপর নেমে আসা এই অত্যাচারের ঘটনা সামাল দিতে না পারার জন্য তথা নিরাপত্তা দিতে না পারার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম শেখায়ত হোসেন হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন।

ওই দেশের সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত খবর অনুযায়ী তিনি বলেছেন, সংখ্যালঘু হিন্দুদের রক্ষা করা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের কর্তব্য। এ ব্যাপারে ব্যর্থতার কথা তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন। ভবিষ্যতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি পরিস্থিতি উন্নতিরও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্ভুক্তি সরকারের সদস্যরা শপথ নেওয়ার পর রবিবার সংখ্যালঘুদের উপর হামলা নিয়ে প্রথম বিবৃতি দেয় তারা। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপরে হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, তারা অবিলম্বে এই ধরনের হামলার ঘটনা বন্ধের উপায় খুঁজে বের করবেন। তারপরেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস হিন্দু ছাত্র যুবদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন সোমবার বিকেলে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখায়ত হোসেন সোমবার বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ১৯ আগস্টের মধ্যে তারা যেন সব অবৈধ ও অনুমোদনহীন আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেন। এর মধ্যে অনেক অস্ত্র বাংলাদেশে সাম্প্রতিক হিংসার সময় পুলিশের কাছ থেকে লুট করা হয়েছে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বলেছেন, সেই অস্ত্রগুলো যদি কাছাকাছি থানায় ফেরত দেওয়া না হয় তাহলে তল্লাশি চালানো হবে। আর যদি সেই অস্ত্র কারো কাছে পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।

৫ আগস্ট সোমবার দুপুরে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারত যাওয়ার পর থেকে সেখানকার হিন্দুদের উপর ব্যাপক হামলার খবর সামনে আসতে শুরু করে। তাদের সম্পত্তি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালানো হচ্ছে, হিন্দু মন্দিরগুলিও ভাঙ্গচুর করা হয়েছে। এমনকি শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগের অন্তত দুই হিন্দু নেতাকে পিটিয়ে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ক’দিনে ৫২টি জেলায় হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, যার সংখ্যা দুশোর ওপরে। এখনো পর্যন্ত হিংসায় মৃতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচশো।

এদিকে এই পরিস্থিতিতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়। তারা সারা দেশে মন্দির, বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তার দাবি করেন। তারা ৮ দফা দাবি পেশ করে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে। তার মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনার দ্রুত বিচারের জন্য ট্রাইবুনাল গঠন করা। সংখ্যালঘুদের জন্য ১০% সংসদীয় আসন ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.