নিয়োগ দুর্নীতি মামলা রাজ্য রাজনীতিতে বড় ঝড় তুলেছে। মামলা গড়িয়েছে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টেও। এরপর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই গঠিত হয়েছে হাইকোর্টের স্পেশাল বেঞ্চ। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহঃ সাব্বির রশিদি এসএসসি মামলার রায় ঘোষণা করেন। তাতে এসএসসির ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করা হয়। কিন্তু কেন পুরো প্যানেল বাতিল করা হলো? কেন যারা যোগ্য তারা এর ফল ভুগবে? রায়ে দানের সময় এই উত্তর দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আদালত মন্তব্য করেছে বাধ্য হচ্ছি। কী ছিল সেই কারণ?
২০১৬- র এসএসসি’র গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ গোটা প্যানেল বাতিল হয়েছে। এক্ষেত্রে আইনজীবীদের একাংশের মতে এটা আদালতের অত্যন্ত বড় পদক্ষেপ। এর আগে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার একাধিক রায় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেটি বেতন ফেরত থেকে শুরু করে চাকরি বাতিল, কিন্তু পুরো বাতিল করার নির্দেশ তিনি কখনো দেননি। কিন্তু কেন এবার এত বড় কঠোর নির্দেশ দিল আদালত? সে ক্ষেত্রে বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চকে শুনানিতে বলতে শোনা গেছে বাধ্য হচ্ছি। আইনজীবী ফেরদৌস শামিম তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এর আগে শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ বারবার রাজ্য সরকার ও এসএসসি’কে জিজ্ঞাসা করেছিল কারা প্রকৃত চাকরি প্রাপক? তার একটা হিসেব দিন। এই হিসেব আদালতে জমা দিতে পারেনি রাজ্য সরকার। রাজ্য ও এসএসসি’র তরফে বারবার এটাও জানানো হয়েছিল সংশ্লিষ্ট ভাবে কারা দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছিলেন। দেখা যায় যত রেকমেন্ডেশন এসএসসি দিয়েছিল তার থেকে বেশি লোক চাকরি করছে। অর্থাৎ সুপার নিউমেরিক পোস্টেও প্রচুর বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছে। সেই কারণেই ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছি বলে জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, আদালতের কাছে মূলত তিনটি পথ খোলা ছিল, প্রথমত আদালতকে রিট পিটিশন বাতিল করতে হতো, দ্বিতীয়ত অযোগ্য প্রার্থীদের আলাদাভাবে চিহ্নিত করা, তৃতীয়তো পুরো প্যানেলটিকে অবৈধ বলে রায় দেওয়া। আদালতের ক্ষেত্রে প্রথম দুটি পথ সঠিক মনে হয়নি। কারণ যোগ্য প্রার্থী কারা সেটি আলাদা করে রাজ্য সরকার, এসএসসির কাছে জানতে চাওয়া হলেও তারা সঠিকভাবে কোনো তথ্য দেয়নি। সে ক্ষেত্রে তৃতীয় পথ অর্থাৎ প্যানেলটাই বাতিল করতে হয়েছে আদালতকে।