বড়দিনের আনন্দ উপভোগ করতে বাঁকুড়ার পর্যটন কেন্দ্র বিহারীনাথ, শুশুনিয়া, গাংদুয়া, রনডিহা, জয়রামবাটি, মুকুটমণিপুর, কদমদেউলি, সুতান, তালবেড়িয়া প্রভৃতি পর্যটন কেন্দ্র গুলিতে মানুষের ভিড়ে সরগরম। পর্যটনের মরসুম শুরু হতেই জেলার সেরা পর্যটন কেন্দ্র পাহাড় নদী ও জঙ্গল ঘেরা রূপসী মুকুটমণিপুরে সব রিসর্ট ও হোটেল হাউসফুল। হোটেল রিসর্টের সামনে এরকম বোর্ড ঝুলছে।
খাতড়া মহকুমার এই পর্যটন কেন্দ্রটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে মুকুটমণিপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি মন প্রাণ ঢেলে পরিকল্পনার পর পরিকল্পনা করেই চলেছেন। এদিনই এখানে ৭ দিনের জন্য শুরু হয়েছে আদিবাসী ফুড ফেস্টিভ্যাল। মন্ত্রী জোৎস্না মান্ডি জানান, শুধুমাত্র আদিবাসীরাই এখানে ফুড স্টল দিয়েছেন। এই ফেস্টিভ্যালে ব্যম্বো চিকেন, শাল চিকেন, মাংসের পিঠে, গেঁড়ি গুগলির পিঠে সহ নানান সুস্বাদু পদ থাকছে। দুপুর আড়াইটে থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত খাবারের স্টলগুলি খোলা থাকবে। স্বাভাবিক ভাবেই মনে করা হচ্ছে ১ জানুয়ারি মুকুটমণিপুরে তিল ধারনের জায়গা থাকবে না। প্রশাসনের কড়া নজরদারি রয়েছে ডিজে, মদ, প্লাস্টিক ও থার্মোকলের জিনিসের উপর। এ বিষয়ে জেল জরিমানা করার নির্দেশও জারি হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পর্যটকদের সুবিধার জন্য এ, বি, সি, ডি, ই এই ৫ টি ভাগে পার্কিং জোন তৈরি করা হয়েছে। পর্যটকদের সুবিধার্থে প্রতিটি পিকনিক স্পটে পুলিশের বিশেষ ক্যাম্প তৈরী করা হয়েছে।পর্যটকদের আকর্ষণ থাকে জলাধারে নৌকা বিহারের। নির্দিষ্ট করে দেওয়া সংখ্যার বেশি যাত্রী তোলা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিন জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র শুশুনিয়া পাহাড়েও ছিল পর্যটকদের ভিড়। এখানের পবিত্র ধারা মুখে স্নান করার বিশেষ রীতি রয়েছে। প্রশাসন সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে স্নানের বিষয়ে বেশ দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিয়েছে বলে ছাতনা থানা দাবি করেছে। গঙ্গাজলঘাঁটির গাংদুয়া জলাধার, মেজিয়ার তারাপুর ঝিল, দামোদর নদের দুর্গাপুর ব্যারেজের মত পিকনিক স্পট গুলিতেও জমজমাট ছিল বড়দিনের মেজাজ। জেলার সোনামুখী ব্লকের দামোদর নদের উপর রনডিহা ড্যামও ছিল উৎসবের চেহারায়। এই ড্যামের এক প্রান্তে রয়েছে বাঁকুড়া জেলা আর অপর প্রান্তে পূর্ব বর্ধমান জেলা। এখানে দামোদর নদীর সৌন্দর্য অপরূপ। তার ওপর নদের দুই পাশে জমে ওঠা ভিড় সেই সৌন্দর্যকে আরও বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছিল এদিন। প্রশাসনিক নজরদারির পাশাপাশি পর্যটকরা যাতে পলিব্যাগ, থার্মকলের প্লেট, গ্লাস ও বাটি ইত্যাদি ব্যবহার, মাদক দ্রব্য ব্যবহার ও ডিজে না বাজান সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি ছিল পরিবেশবাদীদের। পর্যটন কেন্দ্র গুলিতে জেলার পরিবেশবাদী সংস্থা মাই ডিয়ার ট্রিজ এন্ড ওয়াইল্ডসের সদস্যরা এবিষয়ে প্রচার চালান।