দেশ পুড়ছে, বাংলা পুড়ছে, কলকাতা পুড়ছে। আর তাই নিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা এখানকার। জানা গিয়েছে, গত ৫০ বছরে এপ্রিলে কলকাতায় আবহাওয়ার চরম অবস্থা কখনও এতদিন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। আগামী ২১ থেকে ২৩ এপ্রিল তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি কমলেও অস্বস্তি একই রকম থাকবে। কিন্তু এই অবস্থা শুধু এখানকারই না। এই অবস্থা গোটা এশিয়া জুড়ে, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে।
এ মাসের শুরু থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে ভয়ংকর গরম পড়তে শুরু করেছে। ৪ এপ্রিল মালয়েশিয়ায় হিট স্ট্রোকে তিন বছর বয়সি এক শিশু মারা যায়। এর পর থেকে দেশ জুড়ে জলবায়ু-সম্পর্কিত অসুস্থতার প্রবণতা বেড়ে যায়। ভিয়েতনামের দক্ষিণাঞ্চলেও অস্বাভাবিক তাপমাত্রা দেখা দিতে শুরু করে। শুকিয়ে যায় ধানখেত। জারি হয় জরুরি অবস্থা। ফিলিপাইন্সেও তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়। সর্বত্রই গরমের বিভীষিকা! জানা গিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে বিপন্ন অঞ্চলগুলির একটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। এপ্রিলের শুরু থেকেই সেখানে প্রচণ্ড দাবদাহ দেখা গিয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশে– যার মধ্য়ে রয়েছে কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ইত্যাদি– প্রায় ৬৮ কোটি মানুষের বসবাস। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বেড়েছে থাইল্যান্ডে। ৩ এপ্রিল থেকে থাইল্যান্ডে শুকনো মরসুম শুরু। এ সময় থেকে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়ে যায়। কাছেই ভিয়েতনামে শুরু হয় খরা-পরিস্থিতি। সেখানকার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়ায়। ভিয়েতনাম বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ। কম বৃষ্টিপাতের ফলে সেখানকার কৃষকেরা সমস্যায় পড়েছেন। শুকিয়ে যাচ্ছে ধানের জমি।
এ বছর জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা আরও দীর্ঘ সময় ধরে তাপপ্রবাহ ও দাবদাহের আশঙ্কা করছেন। কেন করছেন? কারণ হিসেবে তাঁরা এল নিনোর প্রভাবের কথা বলছেন। এল নিনো প্রতি দুই থেকে সাত বছর ছাড়া-ছাড়া ঘটে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এল নিনোর কারণেই গ্লোবাল ওয়ার্মিং বাড়ছে। এল নিনো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়েও এবারের এই নজিরবিহীন উচ্চ তাপমাত্রার পরিস্থিতি তৈরি করেছে।