কষ্ট করে হাঁটাচলা, কয়েক ঘণ্টায় মৃত্যু! কোন রোগ বাসা বেঁধেছিল চিতার শরীরে? জানালেন চিকিৎসক

অফ্রিকা থেকে আনা দ্বিতীয় চিতাটির মৃত্যুর পর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তার কারণ জানালেন চিকিৎসক। কেন ‘উদয়’ নামের চিতাটির মৃত্যু হল, কোন রোগ তার শরীরে বাসা বেঁধেছিল, সে সবই খতিয়ে দেখা হয়েছে।

বন দফতরের পশু চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, কুনোর এই দ্বিতীয় চিতার মৃত্যুর কারণ, কার্ডিয়ো পালমোনারি ফেলিওর। চিতাটির হৃদ্‌যন্ত্র এবং ফুসফুসে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সেই কারণেই মৃত্যু হয়েছে ‘উদয়’-এর। বন দফতরের প্রধান বন্যপ্রাণ সংরক্ষক জেএস চৌহান বলেছেন, ‘‘পশু চিকিৎসকেরা চিতাটির মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করে দেখেছেন। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, মৃত্যুর কারণ কার্ডিয়ো পালমোনারি ফেলিওর।’’

কুনোর ওই চিতার ময়নাতদন্তে অংশ নিয়েছিল পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল। সেখানে ছিলেন জবলপুর এবং ভোপালের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরাও। মৃত চিতাটির রক্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের নমুনা জবলপুরে আরও কিছু পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

কুনোর জঙ্গলে বসানো ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে, সেখানে থাকতে সমস্যা হচ্ছিল চিতাটির। তার হাঁটাচলা করতে কষ্ট হচ্ছিল। নিশ্চুপ হয়ে বসেও ছিল ‘উদয়’। চিতাটি যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তা বোঝা গিয়েছিল তখনই। তার চিকিৎসাও শুরু হয়েছিল। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরেই চিতাটির মৃত্যু হয়। রবিবার বিকেল ৪টে নাগাদ তার মৃত্যুর খবর মেলে।

কুনো জাতীয় উদ্যান থেকে গত এক সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ ছিল ‘ওবান’ নামে একটি পুরুষ চিতা। সাত দিন ধরে খোঁজ চালানোর পরে, রবিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ একটি জঙ্গলের দিকে সেটিকে যেতে দেখা যায়। তখনই ঘুম পাড়ানি গুলি ছুড়ে ওই চিতাটিকে অচেতন করে কুনো জাতীয় উদ্যানে আবার ফিরিয়ে আনা হয়। এই নিয়ে এক মাসের মধ্যে দু’বার ‘ওবান’ উদ্যান থেকে পালানোর চেষ্টা করেছে। চিতার পালানোর এই প্রবণতাও চিন্তায় রেখেছে বনকর্মীদের।

উল্লেখ্য, আফ্রিকা থেকে দু’দফায় চিতা আনা হয়েছে ভারতে। প্রথমে আসে নামিবিয়া থেকে আটটি চিতা। গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনে সেই চিতাগুলিকে কুনোর জঙ্গলে ছাড়া হয়। খাঁচা উন্মুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। এর পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আরও ১২টি চিতা নিয়ে আসা হয় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে। ‘উদয়’ সেই দক্ষিণ আফ্রিকার চিতাগুলির দলে ছিল। এর আগে নামিবিয়া থেকে আনা একটি চিতারও অসুস্থতার কারণে মৃত্যু হয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.