নদিয়ার হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডের অন্যতম সাক্ষী নির্যাতিতার ছোটকাকাকে মারধরের অভিযোগ এক দল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে বাড়িতে ঢুকে তাঁকে মারধর করা হয়। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। উল্লেখ্য, ওই বাড়িতে রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা বহাল রয়েছে। তা সত্ত্বেও কী ভাবে দুষ্কৃতীরা বাড়িতে ঢুকে সাক্ষীকে মারধর করলেন, প্রশ্ন উঠেছে।
নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, শনিবার রাত ৮টা নাগাদ তাদের বাড়িতে ঢোকেন কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। নির্যাতিতার ছোটকাকাকে সাক্ষ্য দিতে নিষেধ করেন তাঁরা। তাতে রাজি না হলে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। দেওয়া হয় খুনের হুমকিও। পরিবারের সদস্যেরা গোলমাল শুনে ছুটে গেলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যান। হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্তের অনুগামীদের বিরুদ্ধেই এই মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গুরুতর আহত অবস্থায় রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ নির্যাতিতার ছোটকাকাকে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আপাতত সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন। হামলার বিবরণ জানিয়ে ইতিমধ্যে হাঁসখালি থানায় দায়ের করা হয়েছে অভিযোগ। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে নির্যাতিতার বাড়িতে ঢুকল দুষ্কৃতীরা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নির্যাতিতার কাকা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে আমাকে সাক্ষ্য না দেওয়ার জন্য ভয় দেখানো হচ্ছিল। আমি তাতে পাত্তা দিইনি। গতকাল রাতে আমাকে খুন করার চেষ্টা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে আমরা ফের আদালতে যাব।’’
প্রসঙ্গত, নদিয়ার রানাঘাট পুলিশ জেলার হাঁসখালি থানা এলাকায় ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাতে জানানো হয়, ৫ এপ্রিল স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের পুত্রের জন্মদিনের পার্টিতে নিমন্ত্রিত নাবালিকাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সদস্যের পুত্র এবং তার কয়েক জন বন্ধু মিলে নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যাওয়া হয় নাবালিকাকে। পরে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনা রাজ্য জুড়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল।
অভিযোগ, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য তড়িঘড়ি নাবালিকার দেহ স্থানীয় শ্মশানে দাহ করে ফেলা হয়। পরবর্তী কালে নির্যাতিতার মা-বাবা হাঁসখালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মামলা হয় হাই কোর্টে। সেখান থেকে ঘটনার তদন্তের ভার দেওয়া হয় সিবিআইকে। নির্যাতিতার পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পুলিশকে নির্দেশ দেয় আদালত।