‘মাঝরাতে আমায় হোটেলের ঘরে ডেকেছিলেন এক মহাতারকা’, অরিন্দম সাসপেন্ড হতেই মুখ খুললেন দেবলীনা

যৌন হেনস্থার অভিযোগে অরিন্দম শীলকে সাসপেন্ড করেছে ডিরেক্টর্স গিল্ড। তার ঠিক পরেই সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন একাধিক অভিনেত্রী। দেবলীনা দত্তও সমাজমাধ্যমে লেখেন, “সময় সব বলে দেয়। সময়কে কখনওই চুপ করিয়ে রাখা যায় না।” অরিন্দম সম্পর্কে দেবলীনার তুতো ভাই হন। আনন্দবাজার অনলাইনকে দেবলীনা বলেন, “সহকর্মীদের থেকে অরিন্দমদার নামে বহু অভিযোগ শুনেছি। গত বেশ কয়েক বছর ধরে শুনে এসেছি। তার মধ্যে বেশ কিছু অভিযোগ আমি ব্যক্তিগত ভাবে শুনেছি। সেগুলো প্রকাশ্যেই আসেনি।”

শুধু অভিনেত্রী নন, অরিন্দম শীলের সঙ্গে সহ-পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন এমনও অনেকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন। দেবলীনা বলেছেন, “আমি এত দিন এ বিষয়ে কিচ্ছু বলিনি। আসলে মানুষটা তো সম্পর্কে আমার দাদা! আমার কাছে সম্মানের ছিলেন। কিন্তু, তিনি সম্মান হারিয়েছেন। রাগের থেকেও বেশি দুঃখ হচ্ছে। আমি ও মা, দু’জনেই খুব আহত।”

সহকর্মীদের থেকে নানা অভিযোগ শুনেছেন। কিন্তু দাদার সঙ্গে কখনও সরাসরি এ বিষয়ে কথা বলার সুযোগ হয়নি। দেবলীনা বলেন, “এক বারই একটা অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। বেশ কিছু বছর আগের কথা। অভিযোগ যিনি করেছিলেন, তিনি আমার খুব কাছের বন্ধু। কিন্তু অরিন্দমদা বলেছিলেন, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। পুরো ঘটনাই মিথ্যে। তাই আমি একটু সংশয়ে ছিলাম। কিন্তু তার পর থেকে একাধিক অভিযোগ শুনেছি। একই মানুষের বিরুদ্ধে তো একই রকম অভিযোগ বার বার উঠতে পারে না!”

অরিন্দম শীলের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে অনেকেই দাবি করছেন, এমন বহু মানুষ এখনও রয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে। বিনোদন জগতে যৌন হেনস্থার ঘটনা নিয়েও তাঁরা মুখ খুলছেন। দেবলীনারও রয়েছে এমন একটি অভিজ্ঞতা। অভিনেত্রীর কথায়, “বাংলা ইন্ডাস্ট্রির একদল মানুষ নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলেন। বাংলার এক অভিনেতা গিয়েছিলেন, যিনি জাতীয় স্তরেও বিখ্যাত। বাংলা ও হিন্দি দুই ক্ষেত্রেই তিনি বড় তারকা। আমার মা-ও গিয়েছিলেন।”

ঘটনার বিবরণ দিতে দিয়ে দেবলীনা বলেন, “হোটেলে এক দিন সেই তারকার ঘরে বসে আমরা সকলে মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম। ভুলবশত আমার মা গায়ের শালটা ওঁর ঘরে ফেলে আসেন। সে দিন নৈশভোজের সময় সেই তারকা আমার রুম নম্বরটা জেনে নেন। আমি এক প্রথম সারির অভিনেত্রীর সঙ্গে একটা ঘর ভাগ করে নিয়েছিলাম। রাত ঠিক ১২টা বাজে, তখন আমাকে ফোন করেন সেই তারকা। ঘর থেকে শালটা নিয়ে যেতে বলেন। আমি তখন অনেকটাই ছোট। এই ডেকে পাঠানোর ইঙ্গিত না বুঝেই ওঁর ঘরে যাই। তিনি বলেন, সোফায় রাখা রয়েছে শাল। আমি শালটা আনতে গেলেই তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন এবং মদ্যপ অবস্থায় আমার সঙ্গে শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন। আমি দৌড়ে এসে ঘরের দরজা খোলার চেষ্টা করতে থাকি।”

তখন সেই তারকা নিজেই দেবলীনাকে প্রশ্ন করেছিলেন, “তুই কি চলে যেতে চাস?” দেবলীনার সম্মতি নেই দেখে অভিনেত্রীকে তিনি যেতে দেন। দেবলীনার কথায়, “এই একটি কারণেই আমি ওই লোকটির পরিচয় প্রকাশ্যে আনতে চাই না। এর পরে বহু বার ওই অভিনেতার সঙ্গে দেখা হয়েছে। তিনি প্রতি বার খুব সম্মানের সঙ্গে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাধারণত এত বড় মাপের অভিনেতারা প্রত্যাখ্যান নিতে পারেন না। কিন্তু, তিনি পরে কখনও খারাপ আচরণ করেননি আমার সঙ্গে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.