ইউপিএসসিতে সাফল্য পেতে পড়াশোনা এবং সঠিক কোচিং—এই দু’টি বিষয়কেই বিশেষ প্রাধান্য দেন পরীক্ষার্থীরা। তবে ২০২২ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষার শীর্ষতালিকায় এমন এক জন রয়েছেন, যিনি কোনও রকম কোচিংয়ের সাহায্য ছাড়াই সফল হয়েছেন। শুধু সফলই না, শীর্ষতালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। তিনি গরিমা লোহিয়া। ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হতে তাঁর ভরসা ছিল, বই।
গরিমা, বিহারের বক্সারের বাসিন্দা। প্রথম বার ইউপিএসসি দিয়ে উত্তীর্ণ হননি তিনি। ইউপিএসসিতে দ্বিতীয় হওয়া গরিমার সাফল্য এসেছে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায়। তবে দ্বিতীয় বারের প্রস্তুতিতে তিনি কোনও খামতি রাখেননি বলে জানিয়েছেন গরিমা।
৪ বছর আগে গরিমার বাবা নারায়ণপ্রসাদ লোহিয়ার মৃত্যু হয়। হঠাৎ করে নানা অসুবিধা এবং অর্থাভাবের মুখে পড়ে তাঁর পরিবার। কিন্তু লড়াই থেমে থাকেনি।
গরিমা বলেন, ‘‘২০২০ সালে লকডাউনের সময় আমি ইউপিএসসির প্রস্তুতি শুরু করি। প্রথমে লাইব্রেরি থেকে নিয়ে বিভিন্ন বই পড়া শুরু করি। পরে অনেকগুলি ওয়েবসাইটের সাহায্য নিয়েছিলাম। প্রথমের দিকে ৮-১০ ঘণ্টা করে পড়াশোনা করলেও পরে তা কমে ২-৩ ঘণ্টায় দাঁড়ায়।’’
তিনি আরও জানান, ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসাবে তিনি কোনও কোচিং সেন্টারের দ্বারস্থ হননি। বাড়িতে পড়াশোনার দিকেই বেশি মন দিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘কঠোর পরিশ্রম করলে, পড়াশোনায় ধারাবাহিকতা রাখলে, শৃঙ্খলা বজায় রাখলে সাফল্য আসবেই। তবে সফল হতে কোচিং নিতেই হবে, তার কোনও মানে নেই।’’
ইউপিএসসি পরীক্ষায় সাফল্য পেতে ভাল পরামর্শদাতাদের সংস্পর্শে থাকার বার্তাও দিয়েছেন গরিমা। সাফল্যের জন্য পরিবার এবং বন্ধুদেরও কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় জয়জয়কার মহিলা পরীক্ষার্থীদের। শীর্ষতালিকার প্রথম চার জন পরীক্ষার্থীই মহিলা। গরিমা ছাড়া ২০২২-র ইউপিএসসি পরীক্ষায় প্রথম, তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছেন তিন কন্যা। প্রথম হয়েছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির ছাত্রী ঈশিতা কিশোর। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন হায়দরাবাদ আইআইটির প্রাক্তনী উমা হারাথি এন। চতুর্থ স্থানে রয়েছেন স্মৃতি মিশ্র। ঈশিতা, গরিমা এবং স্মৃতি— তিন জনই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী।
২০২২ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় মোট ৯৩৩ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। যার মধ্যে ৬১৩ জন পুরুষ এবং ৩২০ জন মহিলা। শীর্ষতালিকায় থাকা ২৫ জনের মধ্যে ১৪ জন মহিলা এবং ১১ জন পুরুষ।