আমেরিকার গত তিন দশকের ঘোষিত নীতির পরবর্তন করলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। স্থলপথে রুশ আগ্রাসন ঠেকাতে ইউক্রেন সেনাকে মানববিরোধী ল্যান্ডমাইন (সামরিক পরিভাষায় ‘অ্যান্টি পার্সোনেল ল্যান্ডমাইন’) দিতে সম্মত হয়েছে তাঁর সরকার। পেন্টাগনের সূত্র উদ্ধৃত করে, বিবিসি, ওয়াশিংটন পোস্ট-সহ বিভিন্ন পশ্চিমি সংবাদমাধ্যম বুধবার এ কথা জানিয়েছে।
যুদ্ধক্ষেত্রে মূলত দু’ধরনের ল্যান্ডমাইন ব্যবহৃত হয়— ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী (‘অ্যান্টি ট্যাঙ্ক’) এবং ‘অ্যান্টি পার্সোনেল’। নব্বইয়ের দশক থেকেই আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ‘অ্যান্টি পার্সোনেল ল্যান্ডমাইন’ ব্যবহারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে সরব হয়েছে। মানব বিরোধী মাইন নিষিদ্ধ করতে একাধিক আন্তর্জাতিক অধিবেশনেরও পৃষ্ঠপোষকতা করেছে পেন্টাগন। এই পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউস ছাড়ার আগে বাইডেনের অবস্থান বদল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার ছিল রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ১০০০তম দিন। সে দিন সকালে ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সেনা আমেরিকার ‘আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম’ (এটিএসিএমএস) ব্যবহার করে রাশিয়ার ব্রিয়ানস্ক এলাকায় হামলা করে। তার পরেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়েছে মস্কো। এমনকি, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রয়োজনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের জন্য সামরিক বিধি সংশোধন করেন!
ঘটনাচক্রে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের আগে বিদায়ী ‘লেম ডাক’ সরকারের প্রধান জো বাইডেন ইউক্রেনের জন্য যে শেষ দফার সমর সম্ভার বরাদ্দ করেছিলেন তার মধ্যেই ছিল ৩০০ কিলোমিটার পাল্লার ‘ভূমি থেকে ভূমি’ ক্ষেপণাস্ত্র এটিএসিএমএস। কার্যত, পেন্টাগনের নীতি থেকে সরে মূল রুশ ভূখণ্ডে ওই অস্ত্রে হামলা চালানোর জন্য জ়েলেনস্কি সরকারকে অনুমতি দেন বাইডেন। এর জেরে ওয়াশিংটনের তীব্র সমালোচনা করেছিল পুতিন সরকার। আর তার পরে বুধবার তড়িঘড়ি ইউক্রেনের রাজধানী কিভে আমেরিকার দূতাবাস সাময়িক ভাবে বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে বাইডেন সরকার।