চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো অসামাজিক কাজ রুখতে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার আহ্বান জানাল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। আর্থিকভাবে সমৃদ্ধশালী ব্যবসা ক্ষেত্রে সর্বাধিক সংখ্যক সি সি ক্যামেরা বসানোর আর্জি জানালেন পুলিশ সুপার অভিজিৎ ব্যানার্জি।
রবিবার পুরুলিয়া শহরে রবীন্দ্র ভবনে আয়োজিত পুরুলিয়া কমার্স অফ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার। গত ২৯ অগাষ্ট পুরুলিয়া শহরে সেন কো সোনার বিপনীতে ৮ কোটি টাকার ডাকাতির ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে জেলা পুলিশকে। তাই ঝাড়খণ্ড ছুঁয়ে থাকা এই জেলার সমস্ত স্বর্ণ বিপনী, ব্যাংক সহ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১০ দফা নির্দেশিকা পাঠালো পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। তা খুব শীঘ্রই কার্যকর করার জন্য জেলাজুড়ে সমস্ত আর্থিক লেনদেনকারী ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।
এই ১০ দফা নির্দেশিকার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এলার্ম বা বিপদ ঘণ্টি রাখা। যাতে যে কোনও অবস্থার মধ্যেই তা কার্যকর করা যায়, যা শহর পুরুলিয়ার নামোপাড়ায় ডাকাতি হওয়া ওই সোনার দোকানে ছিল না। অন্যদিকে এই বিপদ ঘণ্টি থাকার কারণেই সম্প্রতি হুড়ার হুড়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে চুরির চেষ্টা থেকে রক্ষা পায়। এছাড়া সমস্ত সমস্যার মুশকিল আসানের জন্য “সহায়’ অ্যাপ দোকানের সব কর্মচারীদের মোবাইলে ডাউনলোড করে রাখার পাশাপাশি তা ব্যবহার জানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুরুলিয়া কমার্স অফ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সদস্য দেবকুমার দাঁ বলেন, “আমরা জেলা পুলিশের সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করব। নির্দেশিকা হাতে এলেই আমরা সাংগঠনিকভাবে আলোচনা করব।” উদ্যোগপতি মনোজ ফোগলা বলেন, “আমরা যথেষ্ট সুরক্ষা ব্যবস্থা পরিকাঠামো গড়ে তুললেও পুলিশের এই পরামর্শ কাজে লাগাবো।”
সুরক্ষায় ১০ দফা হল
১) স্থানীয় থানা ও পুলিশ কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বর রাখা।
২) কর্মচারীদের মোবাইলে ‘সহায়’অ্যাপ ডাউনলোড।
৩) ফোনে এসওএস সুবিধা।
৪) সিসিটিভির দ্বিতীয় ডিভিআর।
৫) বিপদ ঘন্টি।
৬) লাইসেন্স যুক্ত আগ্নেয়াস্ত্র সমেত নিরাপত্তারক্ষী।
৭) ক্রেতাকে দেখে সন্দেহ হলে স্থানীয় থানায় জানানো।
৮) নিয়োগের সময় কর্মচারীদের
‘ভেরিফিকেশন’।
৯) নির্দিষ্ট সময় অন্তর সিসিটিভি
ক্যামেরা ও তার ব্যাকআপ এলার্ম কার্যকর আছে কিনা তার তদারকি
১০) ভিজিট বুকের ব্যবস্থা।
এছাড়া জেলা পুলিশ সুপার বলেন, পুরুলিয়া শহরে পর্যাপ্ত সংখ্যক সি সি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলায় ৬০ টি নাকা পয়েন্টে তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া আন্ত রাজ্য সীমান্ত এলাকায় এবং সংযোগকারি সরু রাস্তাতেও নজরদারি থাকছে।