রাজভবন চত্বরে পুলিশের প্রবেশ নিষিদ্ধ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ‘নিষিদ্ধ’ করা হয়েছে রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকেও। বৃহস্পতিবার রাতে রাজভবনের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, রাজভবন চত্বরে পুলিশকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে না মন্ত্রী চন্দ্রিমাকেও। এমনকি, চন্দ্রিমা কোনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলে, সেখানে রাজ্যপাল যাবেন না বলেও জানিয়েছে রাজভবন। তবে বৃহস্পতিবার রাতেই তৃণমূলের তরফে এক প্রতিবাদ কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন চন্দ্রিমা। তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূলের মহিলা মোর্চা শুক্রবার বিকেল ৪টেয় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মৌলালি থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করবে।
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরব হয়েছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা। সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন তিনি। তার প্রেক্ষিতে রাজভবনের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘রাজ্যপালের সম্মানহানি এবং তাঁর বিরুদ্ধে অসাংবিধানিক বিবৃতি দেওয়ার জন্য চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। কলকাতা, দার্জিলিং এবং ব্যারাকপুরের রাজভবনে তিনি ঢুকতে পারবেন না।’’ চন্দ্রিমা কোনও অনুষ্ঠানে থাকলে সেখানেও যাবেন না রাজ্যপাল। বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘চন্দ্রিমার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কী পদক্ষেপ করা যায়, তা জানতে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে পরামর্শও চেয়েছেন রাজ্যপাল।’’
কী বলেছিলেন চন্দ্রিমা?
সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতিতে চন্দ্রিমা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে এসে রাজভবনে রাত্রিবাস করবেন। তার আগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগপত্র জমা দিতে গিয়েছেন এক মহিলা। নারী নির্যাতনের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। এ কী ধরনের ঘটনা ঘটছে! যে রাজ্যপাল বলেন, তিনি ‘পিসরুম’ খুলে সকলের অভিযোগ শুনবেন এবং তার নিষ্পত্তি করবেন। সেই ‘পিসরুম’ কি আসলে নারী সম্মানের ‘পিস হাভেন’ হয়ে গিয়েছে? যেখানে বার বার প্রধানমন্ত্রী নারীশক্তির কথা বলছেন, সেখানে রাজ্যপাল নারীর অপমান, অসম্মান করছেন। এ কী ঘটছে বাংলার মাটিতে! যে মাটি সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক ভাবে ঐতিহ্যশালী। ছিঃ!’’ চন্দ্রিমার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছেন রাজ্যপাল। এই মন্তব্যকে অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। অভিযোগকারিনী জানিয়েছেন, তিনি রাজভবনের অস্থায়ী কর্মী। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। অভিযোগ, এক বার নয়, দু’বার রাজ্যপালের শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন তিনি। রাজ্যপাল নিজে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জানিয়েছেন, ভোটে ফায়দা তোলার জন্য এই চক্রান্ত করা হয়েছে।
রাজভবনের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, ‘‘ভোটের বাজারে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের খুশি করার জন্য এবং অবৈধ, অননুমোদিত তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতে ছদ্মবেশী পুলিশকে রাজভবন চত্বরে নিষিদ্ধ করছেন রাজ্যপাল।’’