২০২১ সালে বাংলাদেশের সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী মন্দিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মা কালীকে পরিয়ে ছিলেন সোনার জল করা মুকুট। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, ওই মুকুটটি চুরি হয়ে গিয়েছে।
সোনার জল করা রুপোর মুকুটটি বৃহস্পতিবার বিকেলে চুরি হয়। জানা গিয়েছে, সেদিন মন্দিরের পুরোহিত দিনের পুজোপর্ব শেষ করে চলে যাওয়ার পরই ঘটনাটি ঘটে। বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের মত, মন্দিরের সাফাইকর্মীরা দেখে যে দেবীর মাথায় মুকুটটি নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশ সফরের সময় ২০২১ সালের মার্চ মাসে যশোরেশ্বরী মন্দিরে দেবী কালীর মাথায় মুকুটটি উপহার হিসাবে পরিয়ে দিয়ে এসেছিলেন।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, একজন লোক মন্দিরে ঢুকে মুকুটটি চুরি করছে। চুরির ঘটনাটি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ইতোমধ্যেই ঘটনার তদন্তে নেমে পড়েছে শ্যামনগর থানার পুলিস।
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় হাই কমিশন ৷ তাদের তরফে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করা হয়েছে ৷ সেখানে লেখা হয়েছে, ‘আমরা ২০২১ সালে যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরে (সাতক্ষীরা) বাংলাদেশ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদির উপহার দেওয়া মুকুট চুরির রিপোর্ট দেখেছি । আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি ৷ চুরির তদন্ত, মুকুট পুনরুদ্ধার এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করছি।’
জানা গিয়েছে, জ্যোতি চট্টোপাধ্যায়, পরিবারের একজন সদস্য যেটি প্রজন্ম ধরে মন্দিরের দেখাশোনা করে আসছেন। তিনি জানিয়েছে, মুকুটটি রুপোর তৈরি এবং সোনার প্রলেপ দেওয়া। চুরি যাওয়া মুকুটটি ভক্তদের জন্য সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে। হিন্দু পুরাণে, যশোরেশ্বরী মন্দিরটি ভারত এবং প্রতিবেশী দেশগুলিতে ছড়িয়ে থাকা ৫১টি শক্তিপীঠগুলির মধ্যে একটি হিসাবে সম্মানিত। এই মন্দিরে দেবী সতীর হাতের তালু ও পায়ের পাতা পড়েছিল। দেবী যশোরেশ্বরী রূপে সেখানে বাস করেন এবং ভগবান শিব চন্দ রূপে আবির্ভূত হন। দেশ-বিদেশ থেকে সারা বছরই বহু মানুষ এই মন্দিরে যান।
সাতক্ষীরার ঈশ্বরীপুরে অবস্থিত মন্দিরটি দ্বাদশ শতাব্দীর শেষার্ধে আনারি নামে এক ব্রাহ্মণ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। তিনি যশোরেশ্বরী পীঠের জন্য ১০০টি দরজা দিয়ে মন্দিরটি নির্মাণ করেন। এটি পরে ১৩ শতকে লক্ষ্মণ সেন দ্বারা সংস্কার করা হয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত, রাজা প্রতাপাদিত্য ১৬ শতকে মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করেছিলেন।