বাংলার মাটিতে ক্রমশ চাষ কমে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী গোবিন্দভোগ ধানের। এক সময় গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে প্রচুর চাষ হত এই ধান। কিন্তু বর্তমানে বিলুপ্ত প্রায় এই ধান। কেন না ফলন কম। তাই বর্তমানে কৃষকেরা এই ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন। এমনকি এই ধান চাষ করতে প্রচুর পরিশ্রম প্রয়োজন। বর্তমান যুগে বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষ শুরু হয়েছে। সেগুলিতে কম পরিশ্রমে ফলন প্রচুর মিলছে। তাতে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। তাই গোবিন্দভোগ ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকেরা।
যদিও বাজারে এই ধানের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এমনকি অনান্য উচ্চ ফলনশীল ধানের থেকে কয়েকগুণ বেশি দামেও বিক্রি হয় এই ধান। জেলা কৃষি দপ্তরের সমীক্ষা রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। এরপরই উদ্বেগ বেড়েছে কৃষি আধিকারিকদের। তাই ঐতিহ্যবাহী এই ধানের চাষ টিকিয়ে রাখতে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জেলা কৃষি দফতর। কৃষকের মধ্যে গোবিন্দভোগ ধানের চাষে আগ্রহ বাড়াতে মালদহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকদের মধ্যে এই ধানের বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এমনকি আধুনিক পদ্ধতিতে কীভাবে চাষ হবে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
মালদহ জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মরশুমে জেলার সদর মহাকুমার গাজোল, হবিবপুর ও বামোনগোলা ব্লক। অপরদিকে চাঁচল মহাকুমার চাঁচল-১,২ ও হরিশ্চন্দ্রপুর -১,২ ব্লকে এই ধান চাষ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এই এলাকার কৃষকদের মধ্যে ধানের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। দুই মহকুমা মিলিয়ে ১০০ হেক্টর জমিতে এই বছর গোবিন্দভোগ ধানের চাষ করানো হচ্ছে কৃষকদের দিয়ে।
ফলন কম হলেও এই ধানের বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, সেই বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করা হচ্ছে। এমনকি এই ধান শুধুমাত্র জৈব সার দিয়ে চাষ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। এতে ধানের ফলন কিছুটা হলেও ভালো হবে। উপকৃত হবেন কৃষকেরা। আগামীতে এই ধানের চাষ কৃষকেরা ব্যাপকভাবে শুরু করলে লাভবান হবে বলে মনে করছেন কৃষি দফতরের কর্তারা। কারণ এই ধানের দাম বাজারে কয়েক গুণ বেশি।