নিরস্ত্র জনগণের উপর বিমান হামলা চালানোর কথা স্বীকার করে নিল মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকার। বিমান হানায় কমপক্ষে ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছে বহু শিশু এবং মহিলা।
মঙ্গলবার সকালে সাগাইং এলাকার কানবালু টাউনশিপের পাজ়িগাই গ্রামে জড়ো হয়েছিলেন শতাধিক মানুষ। উপলক্ষ ছিল বিরোধী আন্দোলনের স্থানীয় দফতরের উদ্বোধন। সেখানেই সকাল ৮টা নাগাদ আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ শুরু হয়। সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-কে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, শ’দেড়েক মানুষের জমায়েত হয়েছিল। তার মধ্যে ২০ থেকে ৩০টি শিশু এবং অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা ছিলেন। সামরিক জুন্টা সরকারের যুদ্ধ বিমান থেকে ফেলা বোমার ঘায়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। বেঁচে নেই বিরোধী আন্দোলনের স্থানীয় নেতৃত্বও। মূলত তাঁদের উদ্যোগেই দলীয় দফতরটির উদ্বোধনের অনুষ্ঠান চলছিল।
ওই প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, প্রথম বোমাবর্ষণ পর্ব শেষ হওয়ার আধ ঘণ্টা বাদে একটি হেলিকপ্টার আকাশে চক্কর কাটতে থাকে। সেখান থেকেও গুলি ছুটে আসছিল। তাতেও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ঠিক কত জনের মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে প্রাথমিক হিসাব বলছে ২০ থেকে ৩০টি শিশু-সহ মহিলা, অন্তঃসত্ত্বা এবং পুরুষ মিলিয়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মায়ানমারের সামরিক জুন্টা সরকারও বিমান হামলা চালানোর কথা স্বীকার করে নিয়েছে।
সেনা সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘‘ওই এলাকায় পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিপি)-র একটি কার্যালয় উদ্বোধনের অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানেই হামলা করা হয়েছে।’’ পিডিপি মায়ানমারের ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (জাতীয় সরকার)-এর সশস্ত্র শাখা। জাতীয় সরকার নিজেদের দেশের আইনি সরকার বলে দাবি করে। সামরিক সরকারের মূল বিরোধী হিসাবেও গোটা দেশে কাজ করে তারা।
সামরিক সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, উর্দি পরিহিত বিদ্রোহীদের নিশানা করে মারা হয়েছে। সেই সঙ্গে কিছু সাধারণ মানুষেরও মৃত্যু হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। যদিও কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে তা জানায়নি। রাষ্ট্রপুঞ্জ নিজের দেশের নাগরিকদের উপর সামরিক জুন্টা সরকারের বিমানহানার তীব্র নিন্দা করেছে। আমেরিকাও এই ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।