প্রথমে নিউ জ়িল্যান্ডের কাছে দেশের মাটিতে ০-৩ হেরে চুনকাম। এ বার অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ১-৩ সিরিজ় হেরে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি হাতছাড়া। কয়েক মাসের মধ্যেই লাল বলের ক্রিকেটে ভারতীয় দলের কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে। দেশের মাটি, বিদেশের মাটি কোথাও টিকতে পারছেন না ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। পাশাপাশি যে মানসিকতা নিয়ে তাঁরা খেলছেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে আরও এক বার ঘরোয়া ক্রিকেটের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন গৌতম গম্ভীর। ভারতীয় দলের কোচের মতে, ঘরোয়া ক্রিকেটকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
রঞ্জি ট্রফির দ্বিতীয় পর্ব শুরু হচ্ছে এই মাসেই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে জাতীয় দলের ক্রিকেটারেরা সেখানে একটি ম্যাচ খেলতে পারেন কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল গম্ভীরের কাছে। ভারতের কোচ বলেছেন, “আমি সব সময় চাই সবাই ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলুক। ঘরোয়া ক্রিকেটকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। স্রেফ একটা ম্যাচ নয়। যারা আরও বেশি খেলতে পারবে এবং যাদের লাল বলের ক্রিকেটের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে তাদের সকলের খেলা উচিত। যদি আপনি ঘরোয়া ক্রিকেটকে গুরুত্ব না দেন, তা হলে টেস্ট ক্রিকেটে খেলার মতো ক্রিকেটার খুঁজে পাবেন না।”
সাম্প্রতিক কালে ভারতীয় ব্যাটারেরা কোনও পিচেই খেলতে পারছেন না। দেশের পিচও তাঁরা চিনতে পারছেন না। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে বেঙ্গালুরুতে পেস সহায়ক উইকেট বানানো হয়েছিল। সেখানে ভারতীয় ব্যাটারেরাই খেলতে পারেননি। ৪৬ রানে অলআউট হয়ে যান। বাকি দুই টেস্টে ঘূর্ণি পিচ বানানো হয়েছিল। ভারতীয় স্পিনারেরা গড়পড়তা বোলিং করেন। সেখানে নিউ জ়িল্যান্ডের স্পিনারেরা টেক্কা দিয়ে বেরিয়ে যান। ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলার কারণে দেশের পিচ চিনতে ব্যাটারদের অসুবিধা হচ্ছে বলে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।
সম্প্রতি শ্রেয়স আয়ার, ঈশান কিশন, সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পাণ্ড্যদের নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে দেখা যাচ্ছে। ঘরোয়া ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা ফেরাতে চায় বোর্ড। পাশাপাশি ক্রিকেটারদের ম্যাচ খেলার মধ্যে রাখতে চায়। তাই শুধু গম্ভীর নন, ভারতীয় বোর্ডের প্রাক্তন সচিব জয় শাহ পর্যন্ত কড়া সুরে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কেউ কেউ সেটা শুনলেও, অনেকেই উপেক্ষা করেছেন। গম্ভীর জমানায় কোনও অজুহাত শোনা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
সিডনির পিচে কোনও জুজু ছিল না বলে মনে করেন গম্ভীর। নাম না করেই দলের ব্যাটারদের দুষেছেন তিনি। বলেছেন, “সিডনির উইকেট খুবই ভাল হয়েছে। টেস্টের জন্য খুবই ভাল। বোলার, ব্যাটার দুই বিভাগকেই সাহায্য করেছে। ব্যাটারদের পরিশ্রম করতে হয়েছে রান করতে। অতীতে সিডনির উইকেটের মতো এই পিচ ছিল না। টেস্টে ফলাফল হবে এমন উইকেটই হওয়া উচিত। দেশে ফিরে আমরা পিচ নিয়ে আরও আলোচনা করব।”
রবিবার ভারতীয় দল সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ছ’উইকেটে হেরে গিয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের ইনিংস শেষ হয় ১৫৭ রানে। জয়ের জন্য ১৬২ রান তাড়া করে ৬ উইকেটে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ভারত সিরিজ়ে হেরেছে ১-৩ ব্যবধানে।