স্বাস্থ্য ভবনে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক শেষ। বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য ভবন থেকে বেরিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। কেউ ক্ষোভে ফেটে পড়লেন, কেউ কেঁদেই ফেললেন! তাঁদের বক্তব্য, প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠক থেকে তাঁরা কোনও সদর্থক বার্তা পাননি। শুধু সময় নষ্ট হয়েছে। বৈঠক থেকে কোনও সমাধানসূত্র না মেলায় জুনিয়র ডাক্তারেরা বুঝিয়ে দিলেন, তাঁদের আমরণ অনশন চলবেই।
জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘সরকারের এতটা অনমনীয়তা আশা করিনি। শুধুই সময় নষ্ট। নিষ্ফলা বৈঠক। কোনও সদর্থক পদক্ষেপ রাজ্য সরকার নেয়নি। রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাব, তাই আমরা আন্দোলনে। একটাও সদর্থক উত্তর পাব না ভাবিনি।’’ বলতে বলতে প্রায় কেঁদেই ফেলেন দেবাশিস। তিনি বলেন, ‘‘এতদিন সরকার বসেছিল কতদিনে আমরা অনশনে বসব? শুধু মৌখিক আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। নতুন কিছু বলা হয়নি। আমরা বলেছি সময় লাগে সবাই জানে, কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু জানান। ওরা বলছেন এখনই নির্দিষ্ট কিছু বলা সম্ভব নয়। বৈঠকে বলা হল পুজো কাটিয়ে নেওয়া হোক। ফের আমরণ অনশন তুলে নিতে বলা হয়েছে। আমরা বলেছি আপনারা অনশন মঞ্চে এসে অনুরোধ করুন।’’
ধর্মতলায় আমরণ অনশনে বসেছেন সাত জন জুনিয়র ডাক্তার। তাঁদের অন্যতম দাবি স্বাস্থ্যসচিবের পদত্যাগ। চারদিন পার হয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনের। এর পর বুধবার সন্ধ্যায় জুনিয়র ডাক্তারদের ইমেল করেন মুখ্যসচিব মনোজ। বৈঠকের জন্য স্বাস্থ্যভবনে আহ্বান জানানো হয় জুনিয়র ডাক্তারদের। সেই মতো জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দল স্বাস্থ্যভবনে যায়। বৈঠক থেকে বেরিয়ে তাঁরা জানান, প্রিন্সিপাল হেলথ সেক্রেটারিকে নিয়েও মুখ্য সচিবের কাছে সরকারের মনোভাব জানতে চাওয়া হয়। সেখানেও সরকারের তরফে বলা হয়েছে এই বৈঠকে এ নিয়ে কিছু বলা যাবে না।
এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের যে সদিচ্ছার অভাব রয়েছে, আজ ফের বোঝা গেল। আমরা বলেছি সময় লাগে সবাই জানে। কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু জানান। বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য সচিব নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনার কিছু নেই। কবে দাবি পূরণ, তা নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের কথা বলেছি।’’
বৈঠক শেষে ধর্মতলার অনশন মঞ্চে ফিরে গিয়েও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদেরই এক জন আশফাকউল্লা বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ভবনে ডেকে অপমান করা হয়েছে। মিটিং ডাকতে হয়, তাই ডেকেছেন। কোনও অ্যাকশন প্ল্যান হাতে ছিল না। মিটিংয়ে যা হয়েছে, ইমেল করে দিলেও বুঝে যেতাম। আমরা মৃত্যুকে ভয় পাই না। মিথ্যেকে ভয় পাই।’’