শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের নাম করে সরকারি চাকরি টোপ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ও তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোনারপুর থানা সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বৈকণ্ঠপুর থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম উত্তম মুখোপাধ্যায় এবং অর্ণব মুখোপাধ্যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরেই এই প্রতারণার কারবার চালাচ্ছিলেন বাবা-ছেলে। কারও থেকে পাঁচ লক্ষ, কারও থেকে দু’লক্ষ টাকা নিয়েছেন। এই ঘটনায় সুমিত দত্ত নামে প্রতারিত এক ব্যক্তি বুধবার বলেন, ‘‘গত দু’বছর ধরে বিভিন্ন সরকারি লোগো ব্যবহার করে টাকা পাওয়া হত।’’ তাঁর কাছ থেকে উত্তম সাড়ে চার লক্ষ টাকা নিয়েও উত্তম চাকরি করে দেননি বলে অভিযোগ সুমিতের।
‘প্রতারিত’ এক মহিলা বলেন, ‘‘উত্তমবাবু বলেছিলেন, এই প্যানেলটা ‘মিনিস্টার প্যানেল’। সবচেয়ে কম টাকার প্যানেল। ওঁকে খুব সম্মান করতাম। সেই বিশ্বাস থেকে টাকা দিয়েছিলাম। অনেকের থেকে তিনি টাকা নিয়েছেন।’’ দেবাশিস মুখোপাধ্যায় নামে আর এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘অর্ণব বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থায় চাকরি করিয়ে দেবেন বলে আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আমার থেকে এক লক্ষ তিন হাজার টাকা নিয়েছিলেন।’’
‘প্রতারিতেরা’ মঙ্গলবার উত্তমের বাড়িতে যান। সেখানে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এর পরেই পুলিশ এসে ওই দু’জনকে থানায় তুলে আনে। রাতে এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের হতেই গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে। উত্তম অবশ্য বুধবার দাবি করেছেন, তিনি কোনও অন্যায় কাজ করেননি। তাঁকে চাকরি দিতে বলা হয়েছিল বলে তিনি সেটা দিয়েছেন। কিন্তু কে এমন কথা বলেছিলেন সেটা খোলসা করেননি।
পুলিশ সূত্রের খবর ধৃতদের বাড়ি থেকে নগদ ২২ হাজার টাকার পাশাপাশি বেশ কিছু জাল নথি এবং সরকারি লোগো ব্যবহার করা কাগজপত্র উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। উত্তম এক সময় পুরনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু এখন তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের দাবি। যদিও শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছেন, উত্তমের সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই।