গ্রেফতার হওয়ার আগেই ইডিকে একটি ‘শর্ত দেন’ সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, তার পর কী হল?

গ্রেফতার হওয়ার আগে ইডিকে একটি শর্ত দেন ঝাড়খণ্ডের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির একটি সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে। ওই সূত্রটির খবর অনুযায়ী, ‘অ্যারেস্ট মেমো’ বা গ্রেফতারির নথিতে সই করার আগে জেএমএম নেতা তদন্তকারীদের জানান যে, তাঁর একটি শর্ত আছে। সেটি হল, গ্রেফতার হওয়ার আগে তিনি রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিতে চান।

ঘটনাচক্রে, ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে ফিরে আসার পরই গ্রেফতার হন হেমন্ত। যা থেকে আপাত ভাবে মনে হতে পারে যে, শিবু সোরেন-পুত্রের শর্ত মেনে নেন ইডির আধিকারিকেরা। ইডির ওই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবারই অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) সংক্রান্ত আদালতে পেশ করা হবে হেমন্তকে। তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানাতে পারে ইডি।

গ্রেফতারির পরে বুধবার রাতেই ইডির বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন হেমন্ত। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিচারপতি শ্রী চন্দ্রশেখর এবং বিচারপতি অনুভা রাওয়াত চৌধরীর ডিভিশন বেঞ্চ হেমন্তের করা মামলাটি শুনবে।

জেএমএমের তরফে জানানো হয়েছে, বিধানসভায় তাদের দলনেতা হবেন রাজ্যের বর্তমান পরিবহণ মন্ত্রী চম্পাই সোরেন। ঝাড়খণ্ডকে পৃথক রাজ্য করার দাবিতে যে আন্দোলন হয়েছিল, তাতে বড় ভূমিকা ছিল এই চম্পাইয়ের। গ্রেফতারির পর এক্স (সাবেক টুইটার)-এ একটি কবিতা পোস্ট করেন হেমন্ত, যা সম্ভবত তাঁরই লেখা। লেখেন, জীবন আসলে বড় যুদ্ধ। প্রতিটা মুহূর্তে তিনি লড়াই করেছেন। আগামী দিনেও করবেন, তবে আপস করবেন না। শেষে তিনি জানিয়েছেন, কোনও মতেই হার স্বীকার করবেন না।

জমি জালিয়াতি মামলায় নাম জড়িয়েছে হেমন্তের। ৬০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে প্রশ্ন করার জন্য গত কয়েক দিন ধরেই তাঁকে খুঁজছিল ইডি। এর মধ্যেই রবিবার রাত থেকে হঠাৎ বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, হেমন্ত ‘নিখোঁজ’। রবিবার শেষ বার দিল্লি বিমানবন্দরে নামতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তার পরে ইডি হেমন্তের দিল্লির বাড়িতে গিয়েও তাঁকে পায়নি। এমনকি, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর জন্য দিল্লির ঝাড়খণ্ড ভবনেও খোঁজ করা হয়। সেখানেও ছিলেন না তিনি। ইডি হেমন্তের ফাঁকা বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে দু’টি বিএমডব্লিউ গাড়ি পায়। আর নগদ ৩৬ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করে। এর পরে প্রায় ৩০ ঘণ্টা ‘নিখোঁজ’ থাকার পরে রাঁচীতে নিজের বাড়ির সামনেই দেখা যায় হেমন্তকে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানে বসেই নিজের দল জেএমএম-এর বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন হেমন্ত। বুধবার দুপুরে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পৌঁছয় ইডি। জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই দিনই সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.