তিন সপ্তাহের মধ্যেই পূরণ হবে পদ, ওয়েটিং লিস্টেও ‘ঠগ’ বাছবে এসএসসি

হাই কোর্টের নির্দেশে ১,৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মীর চাকরির সুপারিশ বাতিল করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁদের জায়গায় কাদের নেওয়া হবে, কী ভাবে নিয়োগ করা হবে, শুক্রবারই তা জানিয়েছেন এসএসসি সভাপতি সিদ্ধার্থ মজুমদার। তিনি জানিয়েছেন, ওয়েটিং লিস্ট থেকে এই ১,৯১১টি শূন্য পদে প্রার্থী নিয়োগ করা হবে। আর সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে তিন সপ্তাহের মধ্যে। কাদের নিয়োগ করা হচ্ছে, তা আদালতে জানাতে হবে। গোটা ঘটনায় এসএসসির ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সিদ্ধার্থ। তাঁর কথায়, ‘‘ভাবমূর্তি ভাঙা সহজ, নতুন করে গড়তে সময় লাগে। ফেরানো কঠিন।’’

বৃহস্পতিবার এসএসসি দাবি করেছিল, ২,৮১৯ জনের উত্তরপত্র (ওএমআর শিট)-এ কারচুপি করা হয়েছে। সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, ওই ২,৮১৯ জনের মধ্যে সুপারিশপত্র পেয়েছিলেন ১,৯১১ জন। তাঁদেরই শুক্রবার চাকরি গেল। তাঁদের পরিবর্তে কী ভাবে নিয়োগ হবে, জানিয়েছেন সিদ্ধার্থ। তাঁর কথায়, ‘‘আদালতের নির্দেশে খুব শীঘ্রই তালিকা আপলোড করব। ১,৯১১ জনের পরিবর্তে যাঁদের কাউন্সেলিং করে নেওয়া হবে, তার তালিকা প্রকাশ করব। এই গোটা প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য বিচারপতি তিন সপ্তাহ সময় দিয়েছেন। অবশ্যই চেষ্টা করব ওই সময়ের মধ্যে কাজটা শেষ করার।’’ তবে তিনি এ-ও জানিয়েছেন, কাজটা কঠিন। সিদ্ধার্থের কথায়, ‘‘কাজটা সতর্ক হয়ে করাই ভাল। চটজলদি করতে গিয়ে যাতে ভুল না হয়, দেখতে হবে। অপেক্ষমান প্রার্থীদের তালিকায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের উত্তরপত্রেও গরমিল রয়েছে। সেটা এখন এসএসসিকে দেখে দিতে হবে।’’

সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, যাঁদের মামলার ভিত্তিতে চাকরি গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে দু’জনের উত্তরপত্র (ওএমআর শিট)-এ গরমিল রয়েছে। আর এই বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক ভাবেই পদক্ষেপ করতে চাইছে এসএসসি, জানিয়েছেন তিনি। সিদ্ধার্থ বলেন, ‘‘কম্পিউটার স্ক্যানিংয়ে যদি এক নম্বর বা দু’নম্বরের ভুলও হয়, যাতে নির্দোষের সাজা না হয়, এই চিন্তা মাথায় রেখে আমরা প্রাথমিক ভাবে তাঁদেরই বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, নিয়োগের ক্ষেত্রে যাঁদের নম্বরের ফারাক বেশি।’’ সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, হলফনামা দিয়ে এই বিষয়টি জানানো হয়েছে। যাঁদের ভুয়ো এবং আসল উত্তরপত্রে নম্বরের ফারাক এক বা দুই নম্বর, তাঁদের ক্ষেত্রে কম্পিউটারে ভ্রান্তি হতে পারে। হাইস্পিড স্ক্যানিংয়ের ক্ষেত্রেও এই ধরনের গন্ডগোল হতে পারে বলে মনে করেন সিদ্ধার্থ। তিনি জানিয়েছেন, এই সব উত্তরপত্র এক বার হাতে (ম্যানুয়ালি) পরখ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সিদ্ধার্থের কথায়, ‘‘প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে আগামী সপ্তাহ থেকেই। প্রথম ধাপ বাতিল, আগামী সপ্তাহেই করব। সম্ভবত, ১৫ তারিখ অর্থাৎ পরের বুধবার আদালতে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করতে হবে। কী কাজ করা হল, কত দূর এগোল, জানানো হবে।’’ তাঁর আশা, গ্রুপ ডি কর্মীদের পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৮০৩ জনের বাতিল সংক্রান্ত একটা বক্তব্য পেশ করতে পারবেন আদালতে। আদালতের নির্দেশে আগামী সপ্তাহে নবম ও দশমেও ৮০৩ জনের চাকরি বাতিলের প্রক্রিয়া এসএসসি শুরু করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.