ডানার প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে ঘাটাল মহকুমায় ফের বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যেকটি নদীর জলস্তর বাড়ছে। বহু গ্রাম ও শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড প্লাবিত হতে শুরু করেছে। বহু রাস্তা ডুবে গিয়েছে। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ক্ষীরপাইতে শিলাবতী নদীর জল বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের দু’টি জায়গায় শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙ্গে বেশ কয়েকটি গ্রামে নতুন করে জল ঢুকছে বলে জানা গিয়েছে। চন্দ্রকোনা-১ ব্লকে ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে।
ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস জানান, প্রশাসন পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। শুধুমাত্র ঘাটাল মহকুমায় বৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কা প্রায় থাকে না। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পশ্চিম অংশ এবং বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় বেশি বৃষ্টি হলে সেই জল দু’-একদিন পর নেমে এসে ঘাটাল মহকুমাকে প্লাবিত করে। তাই ‘ডানা’র প্রভাবে শুক্রবার প্রবল বৃষ্টি হওয়ার পর শনিবার বিকেল থেকে ঘাটাল মহকুমা বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হয়েছে। ঘাটাল মহকুমার মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস জানিয়েছেন যে, শনিবার রাত থেকে ঘাটাল শহরের ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি ওয়ার্ডেই জল ঢুকতে শুরু করেছে। শহরের বেশ কয়েকটি রাস্তা জলে ডুবে গিয়েছে। ঘাটাল ব্লকেরও ছ’টি পঞ্চায়েত এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
সেপ্টেম্বর মাসে চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের হীরাধরপুর এবং ভবানীপুর সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় নদীর বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে গিয়েছিল। সেচমন্ত্রীর নির্দেশমতো সেই সমস্ত বাঁধ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সংস্কারের কাজও শুরু করেছিল সেচদপ্তর। শনিবার রাতে হীরাধরপুর এবং ভবানীপুরে শিলাবতীর বাঁধ ভেঙ্গে বেশ কয়েকটি গ্রাম ফের প্লাবিত হতে শুরু করেছে। ফলে ওই এলাকায় ধান চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কংসাবতী নদীতেও জল বাড়ছে। ফলে সেপ্টেম্বর মাসে ভেঙ্গে যাওয়া নদী বাঁধগুলি দিয়ে রাজনগর পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম আবার নতুন করে প্লাবিত হতে শুরু করেছে। শনিবার বিকেলে ঘাটাল ব্লকের মনশুকায় ঝুমি নদীর উপর বাঁশের সাঁকো জলের তোড়ে ভেঙ্গে যাওয়ায় নদীর দু’দিকের বাসিন্দাদের পারাপারে সমস্যা হচ্ছে।
তবে ঘাটালে কংসাবতী ও রূপনারায়ণ নদের জল বিপদ সীমার অনেক নীচে রয়েছে। আর বৃষ্টি না হলে ঘাটাল মহকুমায় বন্যা নিয়ে সে অর্থে উদ্বেগের কোনও কারণ থাকবে না বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। আশা করা যায়, এদিন বিকেল থেকে প্রত্যেকটি নদীতেই জলস্তর কমতে শুরু করবে।