গোপনে চলেছিল যাবতীয় আয়োজন। জামাই তো নয়ই, মেয়েদেরও পরিকল্পনা জানতে দেননি তাঁরা। দুই শাশুড়ির উদ্যোগ দেখে চমকে গেলেন জামাইরা। ষষ্ঠীর দিন জলে ভেসে ভেসে জামাইষষ্ঠী পালন করলেন তাঁরা। জলেই হল জামাই বরণ, জলেই চলল মিষ্টিমুখ পর্ব।
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের কলেজ রোডের বাসিন্দা প্রশান্ত বিশ্বাস পেশায় শিক্ষক। গোপালগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা উৎপল বায়েন পেশায় ব্যবসায়ী। ছোটবেলা থেকেই তাঁরা অভিন্নহৃদয়ের বন্ধু। রোজকার আড্ডা থেকে ঘুরতে যাওয়া, সবই চলে একসঙ্গে। তাঁদের স্ত্রীদের মধ্যেও খুব ভাব। এই দুই বন্ধুই বৃহস্পতিবার অভিনব ষষ্ঠী উপহার পেলেন শাশুড়িদের কাছ থেকে। দিঘির জলে ভেসে ভেসে নৌকায় জমে উঠেছিল তাঁদের জামাইষষ্ঠী।
দুই শাশুড়ি রাধারানি দে এবং বাণী গুণিন মেয়ে, জামাইকে না জানিয়েই অভিনব জামাইষষ্ঠীর আয়োজন করেছিলেন। প্রতি বছরের মতো এ বারও ষষ্ঠীর দিন জামাইদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করেছিলেন তাঁরা। তার পর সকাল সকাল তাঁদের নিয়ে হাজির হন জয়পুর ব্লকের সমুদ্রবাঁধ নামক দিঘিতে। আগে থেকেই সেখানে নৌকার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। নৌকায় চড়ে জামাইদের কপালে দেওয়া হয় চন্দনের ফোঁটা। শাঁখ বাজিয়ে যথাযথ নিয়ম মেনে শাশুড়িরা জামাই বরণ করেন। নৌকাতেই হয় মিষ্টিমুখ।
শাশুড়িদের এই উদ্যোগে বিস্মিত দুই জামাই। প্রশান্ত বলেন, ‘‘আমরা হতবাক। এ ভাবেও জামাইষষ্ঠী পালন করা যায়, আমাদের জানা ছিল না। বাড়িতে চার দেওয়ালের মাঝে জামাইষষ্ঠীর পরিবর্তে এমন খোলামেলা জায়গায় প্রতি বছর ষষ্ঠী পালন করা হলে তার চেয়ে ভাল আর কিছু হতে পারে না।’’
আর এক জামাই উৎপল বলেন, ‘‘এক ঢিলে দুই পাখি মারা হল। জামাইষষ্ঠী পালনও হল আবার দিঘির জলে নৌকাবিহারও হল। এর চেয়ে ভাল উপহার আর হয় না।’’
এ দিকে, জামাইদের মন জয় করে খুশি শাশুড়িরাও। তাঁরা বলেন, ‘‘মেয়েদের কাছে গোপন রেখে আমরা এই আয়োজন করেছিলাম। তা জামাইদের ভাল লেগে থাকলে সেটাই আমাদের বড় পাওনা।’’