মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা। তার মধ্যেই চিকিৎসক মদনলাল চৌধুরী খুনের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করলো পুলিশ। কিন্তু খুনের কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু বলতে পারলো না পুলিশ। ধৃতদের সোমবার রামপুরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৪ মার্চ দুপুরে বীরভূমের নলহাটি পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রেলগেট সংলগ্ন নিজের বাড়ি থেকে চিকিৎসক মদললাল চৌধুরীর হাত পা বাঁধা রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে কলকাতা থেকে চিকিৎসকের ছেলে মলয় চৌধুরী বাড়ি ফিরে খুনের অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ তদন্তে নেমে অভিযুক্তদের ধরতে সিসিটিভির সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু ঘটনার আগে ও পরে সিসিটিভি অকেজো থাকায় বেগ পেতে হয় পুলিশকে। জেলা পুলিশ সুপার রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, খুনের পর অভিযুক্তদের ধরতে সদর অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে চারটে দল গঠন করা হয়। একটি দল মৃত চিকিৎসকের জমি, বাড়ি, ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত নথি সংগ্রহ করে। অন্য দল কয়েকজনের গতিবিধির উপর নজর রাখে। একটি দল মোবাইলের কথোপকথনের উপর নজর রাখে। এরপর মৃতদেহ উদ্ধার হওয়া ঘরটি তদন্তের জন্য ফরেনসিক এক্সপার্টদের হাতে দেওয়া হয়। তারা আঙুল ও পায়ের ছাপ এবং অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করে। তবে তাদের রিপোর্ট এখনও আসেনি। তদন্ত কমিটি সবদিক বিচার বিবেচনা করে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতরা হল অভিষেক সালুই ওরফে বাপি, তারক কর্মকার, গোরা খান, রাজেশ শেখ এবং সুখেন কর্মকার। প্রথম চারজনের বাড়ি নলহাটি। সুখেন সাঁইথিয়ার বাসিন্দা।
পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে না এলে কিছু বলা যাবে না”। খুনের কারণ নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে পুলিশের মধ্যেই।
এনিয়ে সংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার বলেন, “তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। ধৃতরা সকলে সোনার কাজের সঙ্গে যুক্ত। দুজনের সোনার দোকান রয়েছে মৃত চিকিৎসকের বাড়ির নিচে। আমরা সোমবার ধৃতদের আদালতে তুলে পুলিশ হেফাজতের আবেদন করবো। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের কারণ জানা যাবে। সেই সঙ্গে এই খুনের সঙ্গে পরোক্ষভাবে কেউ যুক্ত রয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখা হবে”।
ধৃতরা সোনার কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করা হলেও চিকিৎসকের বাড়ি থেকে কোনো সোনা খোয়া যাওয়ার কোনো তথ্য পুলিশের কাছে নেই। তবে কিসের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হল পাঁচজনকে? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে নলহাটিতে। তার কারণ ধৃতদের আগে কোনো অপরাধের খাতায় নাম নেই।