অমানবিকতা! স্কুলের খুদে পড়ুয়াকে দিয়ে শৌচালয় পরিষ্কার করানোর অভিযোগ এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদে স্কুল ঘেরাও করে বিক্ষোভ অভিভাবকদের। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের কুড়মাইল নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ের।
সোমবার এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন অভিভাবকরা। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়, সরকারি নিয়ম অনুসারে ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের মিড ডে মিলে আজো জোটেনি ফল। তার উপর পঠন পাঠনও সঠিক হয় না এমনটাও অভিযোগ অভিভাবকদের। স্কুলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তখনই সামনে আসে যখন বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী রিয়া দেবনাথ তাকে দিয়ে শৌচালয় পরিষ্কার করানোর ঘটনা তার বাড়ির লোকজনকে জানিয়ে দেয়।
জানাগেছে, বিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী দুদিন ধরে বাড়িতে ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করছিল না। যা দেখে কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন তার বাবা মা। মেয়েকে তার কারণ জানতে গেলে ছোট্ট ছাত্রী তার মাকে জানায়, বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা তাকে দিয়ে জোর করে শিক্ষকদের শৌচালয় পরস্কার করিয়ে নিয়েছেন। আর এতেই কিছুটা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন ওই স্কুল ছাত্রীর পরিবার। যাদের পাশে দাঁড়িয়ে স্কুল শিক্ষক শিক্ষিকার এমন নিকৃষ্টতর ঘটনার প্রতিবাদ জানান অনান্য অভিভাবকরাও। চলে বিদ্যালয়ের সামনে অভিভাবকদের বিক্ষোভ প্রদর্শন। এদিন দুপুরে এই ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। অভিযুক্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের শাস্তির দাবিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিসের সামনেও বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা। যদিও পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে স্বাভাবিক হয়েছে পরিস্থিতি। ঘটনা জানিয়ে শিক্ষা সংসদ সভাপতিকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ছাত্রীর বাবা সহ অনান্য অভিভাবকরা।
ছাত্রী রিয়া দেবনাথ বলেন, স্কুলের শৌচালয় তাকে দিয়ে পরিস্কার করিয়েছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। সে না করতে চাইলেও জোর করে করিয়েছেন তারা।
ছাত্রীর বাবা অমিত দেবনাথ জানিয়েছেন, তার ছোট্ট মেয়েকে দিয়ে স্কুলের শৌচালয় পরিস্কার করিয়েছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। বাড়িতে ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করছিল না সে। যার কারণ জানতে চাইতেই এ ঘটনা জানায় সে। স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের এমন ঘটনা মোটেই কাম্য নয়। তারা এর সঠিক বিচার চান।
বিক্ষোভকারী এক অভিভাবক টুম্পা মহন্ত সরকার বলেন, স্কুলে তারাও পড়াশোনা করেছেন। স্কুল পরিস্কার, ঝাঁট দেওয়া এসব সকলেই করেছেন। কিন্তু শিক্ষক শিক্ষিকাদের শৌচালয় ছোট্ট ওই মেয়েকে দিয়ে কেন পরিস্কার করানো হবে। ঘটনার সুবিচার চান তারা।
এমন ঘটনা কখনোই কাম্য নয় বলে জানিয়েছেন এআই অফ স্কুল নীরেন মালাকার। তিনি বলেন, অভিভাবকদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ শুনেছেন। এধরণের ঘটনা কখনই হওয়া উচিত নয়। বিষয়টি নিয়ে ডিআই ও চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে এব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।