টোকিও-তে টেনিসে সোনা জয়ীর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ প্রাক্তন বান্ধবীর

মাত্র কয়েক দিন আগেই টোকিও গেমস থেকে জার্মানির হয়ে লন টেনিসে দীর্ঘ দিন পরে ব্যক্তিগত বিভাগে সোনা জিততে সমর্থ হয়েছিলেন আলেকজান্ডার জেরেভ। সেই খুশির রেশ কাটতে না কাটতেই তাঁর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনলেন তাঁর প্রাক্তন বান্ধবী। উল্লেখ্য ওলগা স্রাইপোভা বেশে কয়েক মাস আগেও জেরেভের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার শিকারের অভিযোগ তিনি করেছিলেন। তবে এ বারের অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জেরেভ নাকি এমন কাণ্ড ঘটানোর চেষ্টা করেছিলেন, যাতে হোটেলরুমেই তাঁর বান্ধবীর মৃত্যু ঘটে। ঘটনা এখানেই শেষ নয়। তিনি নাকি চেয়েছিলেন, যাতে অন্য রুমে গিয়ে তাঁর বান্ধবীর মৃত্যু হয়। যাতে করে তাঁকে কোনও রকম সমস্যায় না পড়তে হয়।

উল্লেখ্য প্রখ্যাত সাংবাদিক বেন রথেনবার্গকে আজ থেকে কয়েক মাস আগে দেওয়া সাক্ষাৎকারে, জেরভের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনেছিলেন ওলগা। এ বার দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারে তিনি আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে অভিযোগ করলেন। সাংহাইয়ের এটিপি মাস্টার্স ১০০০ ইভেন্টে ওলগার সাথে এই ঘৃণ্যঁ ঘটনাটি জেরেভ ঘটিয়েছিলেন বলে তাঁর প্রাক্তন বান্ধবীর অভিযোগ। সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্বে ওলগা জানিয়েছিলেন কী ভাবে ইউএস ওপেন এবং লেভার কাপ চলাকালীন জেরেভের সঙ্গে থাকাকালীন তিনি গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়েছিলেন। দ্বিতীয় পর্বে সাক্ষাৎকারে ওলগা যা বললেন তা চমকে ওঠার মতন।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ

সাংহাই মাস্টার্স চলাকালীন তাঁদের মনোমালিন্য চরমে পৌছায়। ওলগা বলেন ‘জেরেভ বলতে শুরু করেন আমি যখন ঘরে এসে পৌঁছাই তখন তুমি কেন ঘরে ছিলে না ? আমাকে সব পরিষ্কার করতে হয়েছে তুমি ছিলে না বলে। তুমি কেন সেলুনে গিয়েছিলে? তোমার জন্য কেন আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে? তুমি আমাকে পাওয়ার যোগ্য নও।’ ‘ওলগার দাবি, তিনি এ সবের উত্তরে বলেছিলেন, ‘আমি সব সময়ে তোমার সাথেই থাকি। তুমি কারও সাথে থাকলে বা কথা বললে তো আমি এ সব করিনা। আমি কি কয়েক ঘন্টার জন্য আমার মুখের পরিচর্যাও করতে পারব না?’

এই ঘটনা এমন জায়গায় পৌছে যায় যে আত্মহননের ও চেষ্টা করেছিলেন ওলগা। ওলগার দাবি অমানুষিক মানসিক চাপ তিনি সহ্য করতে পারছিলেন না। হোটেলের ঘরে ঢুকে আত্মহননের চেষ্টার ফলে কার্যত জ্ঞানহীন ওলগাকে দেখতে পান জেরেভ। তখন তিনি জোর করে ওলগাকে এক প্যাকেট চিনি খাইয়ে তার সংজ্ঞা ফিরিয়ে আনেন। আর তার পরেই ফের শুরু হয় তাঁকে উদ্দেশ্য করে মানসিক অত্যাচার। ওলগার দাবি, ‘জেরেভ সেই সময়ে আমার উপর চেঁচাতে শুরু করে। ও বলে তুমি জানো, কত বড় ক্ষতিটা আমার করতে গিয়েছিলে। তুমি আমার এই ঘরেই মারা গেলে আমার কত বড় সমস্যা হত। জেরেভ বলে, তুমি আমাকে কেন বললে যে আমার জন্য তুমি মরতে চাও। এরপরে স্নান করে বেরনোর পরেই জেরেভ আমাকে বলে তোমার ব্যাগপত্র গুছিয়ে নাও। আর এখনই মস্কো চলে যাও।’

এরপরের ঘটনা শরীরে হিমশীতল রক্তস্রোত বইয়ে দেওয়ার মতন। ওলগার দাবি জেরেভ তাঁর ঘাড় জোরে হাত দিয়ে ধরে তাঁকে ঘুষি মারতে শুরু করে। নিজেকে বাঁচাতে স্রাইপোভাও হাত চালান। এই সময়ে জেরেভ বলে বসেন ওলগাকে, ‘তুমি আমার ঘরের মৃত্যুর কোলে ঢলে পরলে আমার সমস্যা হবে। আমি চাই, তুমি হোটেলের অন্য ঘরে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়। তুমি মরতে চাইলে ইনসুলিন নাও। রাস্তাতে গিয়ে মৃত্যুবরণ কর।’

ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনা। এর পরে হোটেল রুমে জেরেভ তাঁর বাবাকেও ডেকে নেন। সেই সময় ওলগা সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় হোটেল রুমের মেঝেতে বসেছিলেন। জেরেভের বাবা সেই অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন। সাংহাইতে হাতাহাতিতে জেরেভ এবং ওলগা দুজনের শরীরেই ক্ষতচিহ্ন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ওলগার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। সেই সব ছবি তিনি তাঁর বান্ধবীকেও পাঠিয়েছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.