আজও অটুট গোপীবল্লভপুরের শতাব্দী প্রাচীন বুলবুলি পাখির লড়াই

 মকর সংক্রান্তির দিনে গোপীবল্লভপুরের ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গনে আজও অটুট বুলবুলি পাখির লড়াই। মকর সংক্রান্তির দিন সকালবেলায় সুর্বণরেখা নদীতে পূর্ণ স্নান সেরে পিঠে পুলি খেয়ে এলাকার মানুষ ভিড় জমান ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গনে। উদ্দেশ্যে একটাই, বুলবুলি পাখির লড়াই চোখে দেখা।

ঠাকুরবাড়ি এলাকার মানুষের কাছে সবচেয়ে বড়ো উৎসব বলে পরিচিত এই বুলবুলি পাখির লড়াই। এই খেলা মূলত দুটি পাড়াকে কেন্দ্র করেই হয়। একটি দক্ষিণ সাই ও বাজার সাই এখানে সাই অর্থাৎ পাড়া। এই খেলার জন্য একমাস আগে থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে বুলবুলি পাখি ধরে আনেন প্রতিযোগীরা। তারপর প্রতিদিন বুলবলি পাখিদের কলা, আপেল দুধ খাইয়ে পোষ মানান প্রতিযোগীরা। মকর সংক্রান্তির সকাল থেকে বুলবুলি পাখিদের না খাইয়ে উপোস করিয়ে রাখেন। মকর সংক্রান্তির দিন ঠাকুরবাড়ির রাধাগোবিন্দ জিউর মন্দির প্রাঙ্গনে চাঁদুয়া টাঙিয়ে, মঞ্চ তৈরী করে একটি ঝাঁ চকচকে বিছানার ওপর শুরু হয় বুলবুলির লড়াই। এই খেলায় কোনোরকম অস্ত্র ব্যবহার করা হয় না। উপোস থাকা পাখিদের সামনে পাকা কলা দেখিয়ে লড়াই লাগানো হয় দুই পাখির মধ্যে। দুটি পাড়ার পাখিদের মধ্যে যে পাখি বেশি কামড় বসায় সেই পাখির পয়েন্ট বসিয়ে জয় পরাজয়ের ফল ঘোষণা করা হয়।

এই লড়াইয়ে প্রতিযোগীরা হাউসী বলে পরিচিত। লড়াইয়ের পরিলনার দায়িত্বে থাকা রঞ্জিত পান্ডে, স্বরূপ দাশ, রাহুল মুদলি, তপন দেহুরিরা বলেন, আমাদের বুলবুলির লড়াই শতাব্দী প্রাচীন। এই খেলায় কোনো অস্ত্র ব্যবহার করা হয় না। কোনোরকম ভাবেই পাখিদের আহত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এবছরের খেলায় ১৫ টি পাখিকে হারিয়ে প্রথম হন বাজার পাড়ার বাসিন্দা স্বরূপ দাশের পাখি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.