‘সুড়ঙ্গে আমি মরে গেলেও যেত আসত না, ৪১ জনের প্রাণ তো বাঁচত!’ বলছেন ‘ইঁদুর-গর্ত’ খোঁড়া মুন্না

সুড়ঙ্গে ঢুকতে গিয়ে যদি তিনি মরেও যেতেন, তাহলেও কিছু যায় আসত না। কারণ, তাঁর মৃত্যুর জন্য বেঁচে যেত ৪১টি প্রাণ। এমনটাই মন্তব্য করেছেন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ-যুদ্ধে জয়ের অন্যতম কারিগর মুন্না কুরেশী। যে ১২ জন খনিশ্রমিক উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে ‘ইঁদুর-গর্ত’ খুঁড়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম মুন্না। উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর তিনি সংবাদমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন অনন্য অভিজ্ঞতা।

ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মুন্না বলেন, ‘‘মানুষের প্রাণ বাঁচানো জীবনের সবচেয়ে ভাল কাজ। ৪১ জনকে বাঁচাতে গিয়ে এক জন যদি মরেও যায়, সেটা কোনও বড় বিষয় নয়। কারণ ওই ৪১টি জীবনের উপর আরও অনেকগুলি জীবন নির্ভর করে আছে।’’

উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে ‘ইঁদুর-গর্ত’ খুঁড়ে বার করে আনা হয়েছে ৪১ জন শ্রমিককে। শাবল-গাঁইতি দিয়ে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে উদ্ধারকাজে সফল হয়েছেন খনিশ্রমিকেরা। তাঁরা হাত দিয়ে যা করে দেখিয়েছেন, যন্ত্রও তা পারেনি। ১০ মিটার ধ্বংসস্তূপ তাঁরা খুঁড়ে ফেলেছেন মাত্র ২৬ ঘণ্টায়। ওই ২৬ ঘণ্টা একটানা নিরলস ভাবে শুধু কাজ করে গিয়েছেন মুন্নারা। সংবাদমাধ্যমে সেই অভিজ্ঞতার কথাই শুনিয়েছেন তিনি।

মুন্না জানান, এই কাজ করতে গিয়ে তাঁরা সকলেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। খোঁড়াখুঁড়ি শেষ হয়ে তাঁদের চোখে জল এসে গিয়েছিল। গোটা দেশ তাঁদের দিকেই তাকিয়ে ছিল। কিন্তু এত ভাল কাজ করার পরেও মুন্নার বক্তব্য, নিজের সন্তানদের কাছে এ নিয়ে তিনি গর্ব করতে পারবেন না। এমনকি, সন্তানদের এই কাজের কথা তিনি শোনাতেও পারবেন না।

মুন্না জানান, তিনি চান না তাঁর সন্তানেরাও তাঁর মতো খনিশ্রমিক হয়ে উঠুক। তাঁর কথায়, ‘‘সব বাবা-মাই চান, তাঁদের সন্তানকে চিকিৎসক বা ইঞ্জিনিয়ার করে তুলতে। আমিও তাই চাই। তাই আমি কী করেছি, সেই কাজের কথা ওদের শোনাতে পারব না। আমি চাই না ওরাও বড় হয়ে আমার পেশায় আসুক।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.