মহাভারতে শিশুপালের উদ্দেশ্যে সুদর্শন চক্র ছুঁড়ে দেওয়ার সময় কৃষ্ণের হাতের আঙ্গুল কেটে গেলে দ্রৌপদী তাঁর শাড়ির আঁচল খানিকটা ছিঁড়ে কৃষ্ণের হাতে বেঁধে দেন। দ্রৌপদীকে এর প্রতিদান দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কৌরবরা দ্রৌপদীকে অপমান করে তাঁর বস্ত্রহরণ করতে গেলে কৃষ্ণ দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করেন।
দৈত্যরাজা বলি ছিলেন বিষ্ণুর ভক্ত। বিষ্ণু বৈকুণ্ঠ ছেড়ে বালির রাজ্য রক্ষা করতে চলে এসেছিলেন। বিষ্ণুর স্ত্রী লক্ষ্মী স্বামীকে ফিরে পাওয়ার জন্য এক সাধারণ মেয়ের ছদ্মবেশে বলিরাজের প্রাসাদ কাছে আসেন। লক্ষ্মী বলিকে বলেন, তাঁর স্বামী নিরুদ্দেশ। যতদিন না স্বামী ফিরে আসেন, ততদিন যেন বলি তাঁকে আশ্রয় দেন। বলিরাজা ছদ্মবেশী লক্ষ্মীকে আশ্রয় দিতে রাজি হন। শ্রাবণ পূর্ণিমা উৎসবে লক্ষ্মী বলিরাজার হাতে একটি রাখী বেঁধে দেন। বলিরাজা লক্ষ্মীর আত্মপরিচয়ে বলিরাজা মুগ্ধ হয়ে বিষ্ণুকে বৈকুণ্ঠে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। বলিরাজা বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করেন। সেই থেকে শ্রাবণ পূর্ণিমা তিথিটি বোনেরা রাখীবন্ধন হিসেবে পালন করে।
একটি কিংবদন্তী ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করলে রাজা পুরুর পরাক্রম কাহিনী জানতে পেরে আলেকজান্ডারের স্ত্রী রোজানা বা রোক্সানা রাজা পুরুকে একটি পবিত্র সুতো পাঠিয়ে তাঁকে অনুরোধ করেন আলেকজান্ডারের ক্ষতি না করার জন্য। যুদ্ধ চলার সময় রাখীর সম্মান করতে যুদ্ধক্ষেত্রে আলেকজান্ডারকে আঘাত করেননি।
গুজরাটের অধিপতি বাহাদুর শাহ রানি কর্নাবতীর রাজ্য আক্রমনের খবর পেয়ে রানি হুমায়ুনকে রাখী পাঠান। হুমায়ুনের দূত বাহাদুরের কাছে পৌঁছাতে দেরি হয়। দুর্গ জয় করে নেয়। বাহাদুর শাহের সেনাবাহিনীর হাত থেকে সম্ভ্রম রক্ষা করার জন্য ১৫৩৫ সালের ৮ মার্চ রানি কর্ণবতী ১৩,০০০ পুরস্ত্রীকে নিয়ে জহর ব্রত পালন করে আগুনে আত্মাহুতি দেন। চিতোরে পৌঁছে হুমায়ুন বাহাদুর শাহকে দুর্গ থেকে উৎখাত করেন এবং কর্ণবতীর ছেলে বিক্রমজিৎ সিংকে সিংহাসনে বসান।
রবীন্দ্রনাথের রাখী বন্ধন ১৯০৫ সালের জুন মাসে লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত নেয় এবং ১৯০৫ সালের আগস্ট মাসে বঙ্গভঙ্গ জন্য আইন পাশ করা হয়। এই আইন কার্যকরী হয় ১৬ ই অক্টোবর, ১৯০৫।কলকাতা, ঢাকা ও সিলেট থেকে হাজার হাজার হিন্দু ও মুসলিম ভাই ও বোন কে আহ্বান করেছিলেন একতার প্রতীক হিসাবে রাখি বন্ধন উৎসব পালন করার জন্য।
এইভাবেই রাখীবন্ধনের প্রচলন ।
আমরা পরাজয় স্বীকার করিনি আমাদের এক শ্রেণীর মানুষ শিখিয়েছে আমরা পরাধীন ছিলাম আমাদের দেশ পরাধীন ছিল ভারতবর্ষে ১২০০ বছর শক, হূন,মোগল,তুর্কি, পর্তুগিজ, ফরাসি, ইংরেজরা ভারতের শাসন ক্ষমতা দখল করেছিল। কিন্তু ভারতকে সম্পূর্ণ ভাবে পরাধীন করতে পারে নি।
সংগঠন হল মানুষ সমগ্র সমাজকে একই সূত্রে বেঁধে দেওয়া। কিছু মানুষ নিজেদেরকে উন্নত বলে স্বীকার করে।
উন্নত মন জাত তারা ভাবে servival for fitest. তারা মনে করেন আমরা গোষ্ঠীবদ্ধ হব কেন আমার কথাই শেষ কথা। সকলের অধিকার আছে সকলে নিজের নিজের করে ভাবতে পারে এর ফলে এই সকলের ভাবনা এক না হওয়ার কারণে বিভিন্নভাবে তাদের তাদের উন্নতি হয়না।
উন্নত এবং সুসংস্কৃতি ভাবনা ব্যক্তিগতভাবে না সামাজিকভাবে কিন্তু যারা নিজেদেরকে উন্নত এবং সুসংস্কৃতি ভাবে চিন্তা ভাবনা করেন তারা মনে করেন আমি নিজেকে কিভাবে শ্রেষ্ঠ হব, এ সমাজের সকলকে নিয়ে এবং সমাজের সমস্ত মানুষকে একত্রিত করে। এভাবে আমরা আমাদের ভাবনাকে সমাজের সামনে রাখব ।
প্রাচীনকাল থেকেই সমাজকে বিরাট পুরুষ রূপে উপস্থাপিত করা হয়েছে প্রত্যেক ব্যক্তি এই বিরাট সমাজের একটি ছোট অংশ বিশেষ।
এই এক সূত্রে গাঁথা চৈতন্য শক্তি র মধ্যে সুদৃঢ় ও জীবন্ত সমাজ আমরা দেখতে পাই। দেশের প্রতি সমাজের যখন যখনই এরকম ধাক্কা এসেছে তখন তখনই এই ধরণের মানুষরা একত্রিত হয়েছে নিজেকে এবং একসঙ্গে সমাজকে সংগঠিত করেছে।
রাখী বন্ধনে আমাদের সংকল্প প্রকৃত প্রীতি ভাবের অনুভূতি নিয়ে পরস্পরের প্রতি প্রকৃত বন্ধু ভাব উন্মেষ। পবিত্র একাত্ম জীবন সৃষ্টি করে সম্পূর্ণ ভারতবর্ষকে নিজের মধ্যে আত্মস্থ করে মহান ও শক্তিশালী ভারত তৈরীর কাজে আমরা সবাই এগিয়ে চলি।
রাখী বন্ধন হল ভালবাসার প্রতীক ভালবাসা শ্রদ্ধা। ভালবাসা ভক্তি। ভালবাসা করুণা । ভালবাসা অহিংসা। ভালবাসা হল সেবা (জনহিতকর)। ভালবাসা কল্যাণকর। ভালবাসা সমন্বয়। ভালবাসা আত্মসমর্পণ। ভালবাসা বিশ্বাস ।ভালবাসা ভরসা ।ভালবাসা আচার। ভালবাসা ধর্ম ।ভালবাসা উপলব্ধি। ভালবাসা মন ।ভালবাসা মনন। ভালবাসা চিন্তা। ভালবাসা ত্যাগ। ভালবাসা সংযম। ভালবাসা ক্ষমা । ভালবাসা হ’ল মানবতা। ভালবাসা বেঁচে আছে । ভালোবাসাই জীবন। ভালবাসাই ভিত্তি ভালবাসা সত্য ও চিরন্তন।
‘सर्वेषां अविरोधेन’ বেদবাক্য আমরা কারও বিরোধী নই, আমরা সবাইকে সাথে নিই। আমাদের মনে কারও প্রতি ইর্ষা ও হিংসা নেই। প্রজ্ঞা ও প্রজ্ঞা দিয়ে আরও সময় দিয়ে কাজ করতে হবে। হিন্দু সমাজ ও সঙ্ঘ একাত্মবাচক কথা। এই দেশের প্রতি দায়িত্বশীল।