আমেরিকাকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে দিল ইংল্যান্ড, বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বিশ্বচ্যাম্পিয়নেরা

চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে হলে আমেরিকার বিরুদ্ধে জিততে হত ইংল্যান্ড। তারা শুধু জিতলই না, আমেরিকাকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে দিল। বল হাতে নায়ক ক্রিস জর্ডন। হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। প্রথমে ব্যাট করে ১১৫ রানে অল আউট হয়ে যায় আমেরিকা। সেই রান মাত্র ৯.৪ ওভারে তাড়া করে জিতলেন দুই ওপেনার জস বাটলার ও ফিল সল্ট। অর্ধশতরান করলেন বাটলার। এই জয়ের ফলে ইংল্যান্ডের নেট রানরেট অনেকটা বেড়ে গেল। ফলে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্রথম দল হিসাবে জায়গা পাকা করল গত বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নেরা।

আমেরিকাকে হারিয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে সকলের উপরে উঠে গেল ইংল্যান্ড। তাদের নেট রানরেট ১.৯৯২। গ্রুপের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের খেলায় যে দল জিতবে তারাও শেষ চারে উঠে যাবে। সুপার ৮-এ তিনটি ম্যাচই হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল আয়োজক দেশ আমেরিকা।

টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বাটলার। প্রথম ওভারেই আন্দ্রিস গৌসকে আউট করেন রিচি টপলে। দ্বিতীয় উইকেটে ভাল জুটি বাঁধেন স্টিভেন টেলর ও নীতীশ কুমার। পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে টেলরকে আউট করেন স্যাম কারেন।

মাঝের ওভারে আমেরিকার ব্যাটারদের সমস্যা ফেললেন আদিল রশিদ। তাঁর লেগ স্পিন, গুগলি বুঝতেই পারলেন না অ্যারন জোনসেরা। ফলে যা হওয়ার তাই হল। নীতীশ ও অধিনায়ক জোনসকে আউট করলেন রশিদ। সেখানেই আমেরিকার ইনিংস বড় ধাক্কা খেল।

৫ উইকেট পড়ার পরে দলকে টানছিলেন কোরি অ্যান্ডারসন ও হরমিত সিংহ। দলের রান ১০০ পার করেন তাঁরা। দেখে মনে হচ্ছিল, অন্তত ১৩০ রান করার চেষ্টা করছে আমেরিকা। কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে আমেরিকার লোয়ার অর্ডার শেষ করে দিলেন জর্ডন।

১১৫ রানের মাথায় আমেরিকার ষষ্ঠ উইকেট পড়ে। হরমিতকে ২১ রানে ফেরান কারেন। পরের ওভারে জর্ডনের হাতে বল তুলে দেন বাটলার। প্রথম বলেই অ্যান্ডারসনকে ফেরান তিনি। পরের বল ব্যাটে লাগাতে পারেননি আলি খান। উইকেটের পাশ দিয়ে সেই বল বেরিয়ে যায়। তৃতীয় বল আবার ব্যাটে লাগাতে পারেননি আলি। বল এ বার গিয়ে লাগে উইকেটে। চতুর্থ বলটি নশথুশ কেনজিগের প্যাড লক্ষ্য করে করেন জর্ডন। বল গিয়ে প্যাডে লাগে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেন। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি কেনজিগে। পঞ্চম বলে সৌরভ নেত্রাভলকরকে বোল্ড করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন জর্ডন।

আমেরিকার বিরুদ্ধে ২.৫ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন জর্ডন। চারটি উইকেটই আসে একই ওভারে। তাঁর দাপটে ১১৫ রানে ৫ উইকেট থেকে ১১৫ রানে অল আউট হয়ে যায় আমেরিকা।

১১৬ রান তাড়া করতে ইংল্যান্ড যে বেশি সময় নেবে না তার ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি তারা খেলা শেষ করে দেবে তা বোঝা যায়নি। এ বারের বিশ্বকাপে বাটলারের ব্যাটে খুব বেশি রান ছিল না। সেই বাটলার জ্বলে উঠলেন এই ম্যাচে। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক শট খেলা শুরু করলেন। পেসার, স্পিনার কাউকে রেয়াত করেননি তিনি। বাটলারকে মারতে দেখে নিজেকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করেন সল্ট।

পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে ইংল্যান্ড করে ৬০ রান। পরের ৫৭ রান করতে মাত্র ২২ বল নেয় তারা। ১১৬ রান তাড়া করতে নেমে ৩৮ বলে ৮৩ রান করে অপরাজিত থাকেন বাটলার। ৬টি চার ও ৭টি ছক্কা মারেন তিনি। অধিনায়কের ইনিংস খেলেন বাটলার। সল্ট ২১ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.