ট্রেনের ধাক্কায় ৩টি হাতির মৃত্যু। সেই ঘটনায় ঘাতক মালগাড়িটিকে বাজেয়াপ্ত করল বন দফতর। সম্ভবত এই প্রথমবার একটি আস্ত ট্রেনকে বাজেয়াপ্ত করার ঘটনা ঘটল। যা এককথায় নজিরবিহীন। বক্সা ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের পশ্চিম ডিভিশনের পক্ষ থেকে ট্রেনটিকে আটক ও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ইঞ্জিনের গায়ে সেঁটে দেওয়া হয়েছে বাজেয়াপ্ত করার নোটিস।
বন দফতরের তরফে রেলকে ঘাতক মালগাড়িটি বাজেয়াপ্ত করার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে কালচিনি স্টেশনে ট্রেনটিকে রেখে দিতে বলা হয়। বর্তমানে ট্রেনটি কালচিনি স্টেশনে রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে যে, চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন না। তাহলে কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল? দুর্ঘটনার সময় মালগাড়ির গতিবেগ কত ছিল? যেখানে বন্যপ্রাণ করিডরের ক্ষেত্রে ট্রেনের স্পিড লিমিট রয়েছে, সেই গতির সীমা মানা হয়েছিল কিনা? সেইসব তথ্য-ই এবার রেলের কাছ থেকে জানতে চায় বন দফতর। এককথায় নজিরবিহীনভাবে আস্ত একটি ট্রেনকে বাজেয়াপ্ত করে রেলের উপর চাপ বাড়াল বন দফতর। উল্লেখ্য, রেলের সঙ্গে বন দফতরের সমন্বয়ের অভাব বার বারই সামনে এসেছে। তবে এভাবে আস্ত ট্রেনকে বাজেয়াপ্ত করার ঘটনা আগে ঘটেনি। রেলের উপর চাপ সৃষ্টি করে গতি সহ অন্যান্য তথ্য জানতে চায় বন দফতর।
এদিন সকালে আলিপুরদুয়ারের রাজাভাতখাওয়ায় মালগাড়ির ধাক্কায় ৩ হাতির মৃত্য়ু হয়। ২ সন্তান সহ মায়ের মৃত্যু হয় ট্রেনের ধাক্কায়! শিলিগুড়ি জংশন থেকে আলিপুরদুয়ারে আসছিল মালগাড়িটি। সেইসময়ই মালগাড়ির ধাক্কায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে যে, ঘটনাটি ঘটেছে সকাল ৭টা ২০ মিনিট নাগাদ। ওই এলাকাটি হাতির করিডর এলাকা-ই ছিল। কিন্তু রেল সূত্রে দাবি, ওই এলাকায় সকাল ৫টা পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালানোর নিয়ম আছে। তারপর আর কোনও গতির বাধা নেই। ওদিকে যে মালগাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি খালিও ছিল।
কিন্তু তাহলে কেন ৩টে হাতির মৃত্যু হল? কেন এড়ানো গেল না হাতির মৃত্যু? উঠছে প্রশ্ন। রেল মনে করছে, হঠাৎ করেই হাতি লাইনে চলে আসে। ফলে ব্রেক কষলেও গাড়িটি ৪০০ থেকে ৫০০ মিটার এগিয়ে যায়। কারণ মালগাড়ি এমনিতেই ভারী হয়। পাশাপাশি, রেল সূত্রে আরও দাবি, যে ১৮ কিলোমিটার এলাকায় রেল হাতির উপস্থিতি বোঝার জন্য নির্দিষ্ট সিস্টেম ব্যবহার করে, দুর্ঘটনাস্থলের এলাকাটি তার মধ্যে পড়ে না। গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে রেল সূত্রে দাবি।