অষ্টাদশ লোকসভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে সোমবার থেকে। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ সাংসদেরা শপথ গ্রহণ করতে চলেছেন। প্রোটেম স্পিকার ভর্তৃহরি মহতাবের তত্ত্বাবধানে হবে সাংসদদের শপথগ্রহণের অনুষ্ঠান। তবে প্রথম দিনেই এনডিএ বনাম ‘ইন্ডিয়া’ সংঘাতের আবহ তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা। কারণ প্রোটেম স্পিকারের নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যে মোদী সরকারের সমালোচনা শুরু করে দিয়েছে বিরোধীরা। সোমবার সাংসদদের শপথগ্রহণের সময় সেই বিরোধিতার আঁচ লাগতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।
গত ৪ জুন লোকসভার ফল প্রকাশিত হয়েছে। তার পর নতুন লোকসভার প্রথম অধিবেশন বসবে সোমবার। বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের ২৯২ জন, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ২৩৩ জন এবং অন্যান্যদের ১৮ জন সাংসদের শপথগ্রহণ করার কথা। দু’দিনে এই অনুষ্ঠানকে ভাগ করা হয়েছে। শপথগ্রহণের প্রক্রিয়া চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত।
সোমবার সকাল ১১টা থেকে শপথগ্রহণ শুরু হবে। প্রথম শপথ নেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাঁকে লোকসভার দলনেতা বলে ঘোষণা করবেন প্রোটেম স্পিকার। তার পর বিভিন্ন রাজ্যের নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী সাংসদদের নাম ডাকা হবে। এ ক্ষেত্রে অসমের সাংসদেরা প্রথমেই সুযোগ পাবেন। পশ্চিমবঙ্গের ডাক আসবে সব শেষে।
লোকসভার অধিবেশন শুরুর আগে সোমবার রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর তত্ত্বাবধানে প্রোটেম স্পিকার হিসাবে শপথ নেবেন ওড়িশার কটকের সাত বারের সাংসদ ভর্তৃহরি। তার পর তিনি সংসদে পৌঁছে সাংসদদের শপথগ্রহণের অনুষ্ঠান শুরু করবেন। এই কাজে প্রোটেম স্পিকারকে সাহায্য করার জন্য বিরোধী দলের নেতাদের নিযুক্ত করেছেন রাষ্ট্রপতি। প্রোটেম স্পিকারের প্যানেলে রাখা হয়েছে কংগ্রেসের কে সুরেশ, তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিএমকে-র টি আর বালুকে। কিন্তু বিরোধীরা এই দায়িত্ব গ্রহণ না করার কথা ভাবছেন। সে ক্ষেত্রে প্রোটেম স্পিকারের প্যানেলে শুধুমাত্র বিজেপির রাধামোহন সিংহ ও ফাগ্গন সিংহ কুলস্তে থাকবেন। সাংসদদের শপথ নেওয়া হয়ে গেলে আগামী ২৬ জুন লোকসভার স্পিকার নির্বাচন হবে। তার পর ২৭ জুন লোকসভা এবং রাজ্যসভার যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি। আগামী ২ বা ৩ জুলাই সংসদের বিতর্কে অংশ নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রোটেম স্পিকারের দায়িত্ব সাধারণত লোকসভার সবচেয়ে বরিষ্ঠ এবং অভিজ্ঞ সাংসদকে দেওয়া হয়। সে দিক থেকে মনে করা হয়েছিল, এ বার এই দায়িত্ব পাবেন কংগ্রেসের আট বারের সাংসদ কে সুরেশ। কিন্তু তাঁর পরিবর্তে সাত বারের সাংসদ ভর্তৃহরিকে এই দায়িত্ব দেওয়ায় শুরু হয় বিতর্ক। কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, দলিত বলে সুরেশকে প্রোটেম স্পিকার করা হয়নি। সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এ নিয়ে যুক্তি দেন, সুরেশ টানা আট বারের সাংসদ নন। মাঝে দু’বছর তিনি ভোটে হেরেছিলেন। কিন্তু ভর্তৃহরি টানা সাত বছর ধরে সাংসদ পদে রয়েছেন। প্রোটেম স্পিকারের ইস্যুকে হাতিয়ার করে বিরোধী শিবির লোকসভার অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই সংঘাতের পথে যেতে পারে।