এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে খেলে আসার পর ইস্টবেঙ্গলের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে অনেকটাই। এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই| তারউপর মহামেডানের বিরুদ্ধে ন’জনে হয়ে যাওয়ার পরেও, প্রতিপক্ষকে জিততে না দেওয়ার জেদও জুড়েছিল| এমন আবহে শুক্রবার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গলের প্রতিপক্ষ ছিল নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড। ওদিকে কার্ড সমস্যার জন্য দলের দুই ষ্টার- নাওরেম মহেশ এবং নন্দকুমারকে পায়নি ইস্টবেঙ্গল| কিন্তু ম্যাচের আগে অস্কার ব্রুজো বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, দলের সমস্যা এবং প্রতিপক্ষের ‘আলাদিন আজারেই আতঙ্ক’ যতই থাক না কেন, তাঁর টিম তিন পয়েন্ট তুলে নিতে মরিয়া| সেটাই করে দেখালেন তিনি|
মহেশ-নন্দর বদলে বিষ্ণু-জিকসনেই ভরসা রাখলেন লাল-হলুদ কোচ| ডিফেন্সে পেলেন ফিট হয়ে যাওয়া হেক্টর ইয়ুস্তেকে| প্রথম থেকেই ইস্টবেঙ্গল একেবারে আক্রমণাত্মক ফুটবলের পথই বেছে নিয়েছিল| ম্যাচের দু’মিনিটেই জিকসনের ক্রস থেকে বিষ্ণু গোল করে দেওয়ার জায়গায় চলে এসেছিলেন| অল্পের জন্য গোল হাতছাড়া হয়ে যায়| এই মুহূর্তের রেশ কাটতে না কাটতেই দিমিত্রি ডায়মান্টাকোসকে ফাউল করার ইস্টবেঙ্গল কর্নার পেয়েছিল| মাদি তালাল শট নিয়েছিলেন, এবারও অল্পের জন্য গোল হাতছাড়া করে ইস্টবেঙ্গল|
ম্যাচের ২৩ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন সেই দিমি| তালালের পিন-পয়েন্ট ক্রস থেকে দিমি হেডে টপ কর্নার দিয়ে গোল করে, লাল-হলুদ জনতাকে সেলিব্রেশনে ভাসিয়ে দেন| এই গোল দেখা ছাড়া নর্থ-ইস্টের গোলকিপার গুরমিতের কিছু করার ছিল না| বিরতিতে ১-০ এগিয়ে মাঠ ছাড়ে ইস্টবেঙ্গল|
বিরতির আগে ইস্টবেঙ্গল যেখানে শেষ করেছিল, বিরতির পর ঠিক সেখান থেকেই শুরু করে| একই আগ্রাসন ছিল অস্কারের শিষ্যদের| তবে ৭২ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল ‘নিউমেরিক্যাল সুপারিওরিটি’ পেয়ে যায়| সংখ্যাতত্ত্বে এগিয়ে যায় তারা নর্থ-ইস্টের মিডফিল্ডার মহম্মদ আলি বেমামের মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান| তিনি লাল কার্ড দেখেন জোড়া হলুদ কার্ড পেয়ে| ১০ জনের হয়ে পড়ে নর্থ-ইস্ট| ওদিকে ৮৭ মিনিটে লালচুংনুঙ্গাও জোড়া অপরাধে মার্চিং অর্ডার পান|
ইস্টবেঙ্গল দ্বিতীয় গোলের জন্য মরিয়া চেষ্টা করে গেল ৯০ মিনিট পর্যন্ত| দুৰ্ভাগ্যবশত গোলটা এল না| মাঠে রেফারির সঙ্গে বচসা ও দুই দলের ফুটবলারদের হাতাহাতির কারণে আট মিনিট যোগ হয়েছিল আরও| কিন্তু গোলের দেখা পায়নি ইস্টবেঙ্গল| তবে চেষ্টার কোনও খামতি ছিল না|
আলাদিন-বেমামের-পার্থিবদের দাঁত ফোঁটাতে না দিয়ে, মরসুমের প্রথম আইএসএল জয় তুলে আনল মশালবাহিনী| নিঃসন্দেহে এই কৃতিত্ত্ব কোচ এবং ফুটবলারদের| অবশেষে আট নম্বর ম্যাচে এল স্বস্তির তিন পয়েন্ট| পাহাড়ি দলকে হারিয়ে ইস্টবেঙ্গলের এই জয় ফ্যানদের মন ভরিয়ে দেবে| এই ইস্টবেঙ্গলকেই তো দেখতে চায় তাঁরা|