নন্দকুমারের গোলে চেন্নাইয়িনকে হারাল ইস্টবেঙ্গল, প্লে-অফের লড়াইয়ে টিকে লাল-হলুদ

আইএসএলে আবার জয়ে ফিরল ইস্টবেঙ্গল। সোমবার ঘরের মাঠে তারা হারিয়ে দিল চেন্নাইয়িন এফসি-কে। ১-০ ব্যবধানে জিতল লাল-হলুদ। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের একমাত্র গোল চেন্নাইয়েরই ভূমিপুত্র নন্দকুমারের। এই জয়ের ফলে আইএসএলের প্লে-অফের দৌড়ে টিকে থাকল তারা। বেঙ্গালুরুকে টপকে পয়েন্ট তালিকায় উঠে এল আট নম্বরে। এখন ১৬ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট ইস্টবেঙ্গলের।

প্লে-অফের লড়াইয়ে টিকে থাকতে গেলে ইস্টবেঙ্গলকে এই ম্যাচে জিততেই হত। কারণ এর পরে টানা চারটি কঠিন ম্যাচ খেলতে চলেছে তারা। ওড়িশা, গোয়া, মোহনবাগান এবং কেরলের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে। লিগের পয়েন্ট তালিকায় প্রথম পাঁচের মধ্যে রয়েছে সবক’টি দল। এর মধ্যে মোহনবাগান বাদে বাকি সবক’টি বাইরের মাঠে খেলতে হবে লাল-হলুদকে। ফলে সবই কঠিন লড়াই। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে জয় কিছুটা হলেও উদ্বুদ্ধ করবে লাল-হলুদ শিবিরকে।

এ দিন প্রথম একাদশে আলেকজ়ান্ডার পান্টিচকে রাখেননি কার্লেস কুয়াদ্রাত। গোল পাওয়ার লক্ষ্যে ক্লেটন সিলভার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন ফেলিসিয়ো ব্রাউনকে। সেই ফেলিসিয়ো এতটাই খারাপ খেললেন যে তাঁকে মাঠে লুকিয়ে থাকতে হল। গা জোয়ারি ফুটবল ছাড়া এই কোস্টা রিকানের আর কোনও অবদান নেই। বেশির ভাগ সময়েই নিজের গোলের দিকে তাকিয়ে বল রিসিভ করেন। এর পর গুঁতোগুতি করে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢোকার চেষ্টা করেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই চেষ্টা কাজে লাগে না। এক বার বক্সের খুব কাছে ফ্রিকিক আদায় করেছিলেন। কিন্তু ক্লেটনের ফ্রিকিক লক্ষ্যে ছিল না।

ম্যাচের শুরু থেকেই চেন্নাইয়ের আক্রমণ ধেয়ে আসতে থাকে ইস্টবেঙ্গলের অর্ধে। কখনও ফারুখ চৌধরি, কখনও ভিন্সি ব্যারেটো, কখনও জর্ডান মারে আক্রমণ করছিলেন। ইস্টবেঙ্গলের কাছে প্রথম সুযোগ আসে ১২ মিনিটে। ক্লেটনের পাস ছিল ফেলিসিয়োর উদ্দেশে। ভাল সুযোগ বারের উপর দিয়ে উড়িয়ে নষ্ট করেন ফেলিসিয়ো। সুযোগ বক্সে ইস্টবেঙ্গলের অর্ধে ফুটবলার বাড়াতে থাকে চেন্নাইয়িন। ফারুখের থেকে বল পেয়ে মারের একটি শট অল্পের জন্য বাঁচিয়ে দেন ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডার।

ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল দেখতে দেখতে বিরক্তিতে হাই তুলছিলেন সমর্থকেরাই। প্রায় পুরো প্রথমার্ধেই তারা রক্ষণ করে কাটাল। বিরতির ঠিক আগে রেফারির একটি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করতে গিয়ে হলুদ কার্ড দেখলেন কুয়াদ্রাত।

দ্বিতীয়ার্ধে নিজের কৌশলে বদল আনেন কুয়াদ্রাত। ফেলিসিয়োকে তুলে নিয়ে নামান পিভি বিষ্ণুকে। পান্টিচকে আনেন রাকিপের জায়গায়। তবু একচেটিয়া দাপট বজায় থাকে চেন্নাইয়ের। কিন্তু সঠিক ফিনিশারের অভাব এবং ফাইনাল থার্ডে এসে খেই হারিয়ে ফেলার কারণে গোল করতে পারছিল না তারা। ফুটবলারদের খারাপ পাসিংও দায়ী। ইস্টবেঙ্গল সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারছিল না। যে দু’-একটা আক্রমণ হচ্ছিল, বেশির ভাগটাই প্রতি আক্রমণের ফসল।

৬৫ মিনিটে খেলার বিপরীতেই গোল করে ইস্টবেঙ্গল। ডান দিকে বল পেয়েছিলেন নন্দকুমার। কিছুটা এগিয়ে এসে ডান পায়ের নীচু জোরালো শট নেন। ইউমনামের পায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে সেটি গোলে ঢুকে যায়। কিছু করার ছিল চেন্নাইয়িনের বাঙালি গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদারের। ইস্টবেঙ্গলের গোলের পরেই দলের অন্যতম সেরা অস্ত্র রাফায়েল ক্রিভেলারোকে নামিয়ে দেন চেন্নাইয়িনের কোচ ওয়েন কয়েল। তাতে চেন্নাইয়িনের খেলায় আরও ঝাঁজ বাড়ে।

শেষের দিকে বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল চেন্নাইয়িন। কিন্তু কোনওটাই কাজে লাগাতে পারেনি তারা। অপর দিকে, ইস্টবেঙ্গল প্রতি আক্রমণে কয়েক বার উঠলেও গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.