চিরাচরিত প্রথা মেনে দশমীর সন্ধ্যায় বেলুড় মঠে প্রতিমা নিরঞ্জন হল। আজ, মঙ্গলবার এই নিরঞ্জন দেখতে বেলুড় মঠে উপস্থিত ছিলেন অসংখ্য ভক্ত। নিরঞ্জনের আগে মাকে বরণ করা হয়। সন্ন্যাসীরা ঢাক ঢোল কাঁসরের তালে ধুনুচি নৃত্য করেন। এরপর মঠের নিজস্ব গঙ্গার ঘাটে, মায়ের মন্দিরের সামনের ঘাটে মা দুর্গার নিরঞ্জন হয়।
বোধনের পরে স্বাভাবিক নিয়মেই তো আসে বিসর্জনের লগ্ন। এসেছেও। আজ, মঙ্গলবার দশমীতে দুপুরের পর থেকেই রাজ্য জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রতিমা নিরঞ্জনপর্ব। প্রথমে মূলত বাড়ির পুজোগুলির বিসর্জন হয়েছে, হয়েছে আবাসনের পুজোর প্রতিমা নিরঞ্জন। এর পরে হবে বারোয়ারি। জেলায়-জেলায়, মহল্লায়-মহল্লায়, পাড়ায়-পাড়ায় আজ বিষাদের সুর।
সেই বিষাদের সুরই বেলুড় মঠেও। তবে এখানে সন্ন্যাসীদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। মা চলে যাচ্ছেন সেই কষ্ট তাঁদের আছে ঠিকই, তবে মায়ের মনে তো বেশি কষ্ট। মা যাতে বিদায়ের সময়ে দেখে যান যে, তাঁর সন্তানেরা আনন্দেই রয়েছে, তাই সন্ন্যাসীরা নেচে-গেয়ে মাকে আনন্দিত করেন। এই ভাব বজায় রেখেই প্রতিমা নিরঞ্জন হল সেখানে।
প্রতিমা নিরঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে হাওড়াতেও। রামকৃষ্ণপুর ঘাট-সহ অন্যান্য ঘাটে চলছে নিরঞ্জন। ভাসান শুরু রানাঘাটেও। বিকেলবেলা থেকেই সেখানে শুরু হয়ে গিয়েছে ভাসান। রানাঘাটের বাড়িরপুজোগুলির একে একে ভাসানপর্ব চলছে চূর্ণী নদীতে। সকাল থেকেই শিলিগুড়ি লালমোহন মৌলিক নিরঞ্জনঘাটে চলছে প্রতিমা নিরঞ্জন। এখানেও মূলত বাড়ির পুজোগুলিরই নিরঞ্জন চলছে। জলপাইগুড়ির বৈকন্ঠপুর রাজবাড়ির দুর্গাপুজো ৫১৪ বছরের। এই পুজোয় রাজপরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বহু সাধারণ মানুষও বিজয়া দশমীর নিরঞ্জন-উৎসবে অংশ নেন, মহিলারা মাতেন সিঁদুর খেলায়। আজও সেখানে সকাল থেকে সকলে ভিড় জমিয়েছেন। বেলা যত বেড়েছে রাজবাড়ি-চত্বরে বিসর্জন উপলক্ষে ভিড় তত বেড়েছে। রাজপরিবারের রীতি অনুযায়ী, মা’কে রথে করে বিসর্জন ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। বিসর্জন-পর্ব শুরু দার্জিলিংয়েও। সেখানেও চলছে সিঁদুরখেলা। ঘাটগুলিতে রয়েছে কড়া নিরাপত্তা। পুরসভার কর্মীরা উপস্থিত রয়েছেন। প্রতিমা জলে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা তুলে নেওয়া হচ্ছে। ফুল ও অন্যান্য আবর্জনা গঙ্গায় ফেলতে দেওয়া হচ্ছে না।