durga puja 2021: দুর্গাও থাকুন নিভৃতবাসে, করোনা-অভিমানে গৌরীকে গৃহবন্দি করছেন শিল্পী সিদ্ধার্থ, দর্শনেও নিয়ন্ত্রণ

মহালয়ায় চক্ষুদান। তার আগে এখন থেকেই ব্যস্ততার সীমা নেই সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এ বার নিজের স্টুডিয়োয় দুর্গাকে গৃহবন্দি করে রাখতে চান তিনি। কলকাতার বাসিন্দা সিদ্ধার্থর স্টুডিয়ো হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায়। সেই স্টুডিয়োতেই সপরিবারে নিভৃতবাসে থাকবেন দুর্গা। কিন্তু কেন এমন সংকল্প? সিদ্ধার্থের কথায়, ‘‘বাংলায় দুর্গা হলেন কন্যা। তাই আমি উমাকে বাইরে যেতে দেব না। ঘরেই থাকুন, যত দিন না আশপাশ করোনা-মুক্ত হচ্ছে।’’

দুর্গাকে নিয়ে উদ্বেগ না অভিমান? সিদ্ধার্থ বললেন, ‘‘অভিমানও রয়েছে। আমি আসলে দুর্গাপুজোর সঙ্গেই বড় হয়েছি। অনেক রকম কাজ করেছি, কিন্তু কখনও দুর্গাপুজো থেকে দূরে থাকিনি। গত বছরটা খুবই খারাপ কেটেছে। সেই থেকে আমিও খানিকটা নিভৃতবাসেই রয়েছি। আচমকাই মনে হল, আমার নিভৃতবাসের সঙ্গী বানিয়ে নিই উমাকে। সেই ভাবনা থেকেই কাজ শুরু করেছি।’’


কাটোয়ার কাছে কেতুগ্রাম থানার কেউগুড়ি গ্রামের ছেলে সিদ্ধার্থ কলকাতায় আসেন ১৯৮৪ সালে। আর্ট কলেজের ছাত্র হয়ে কলকাতাকে প্রথম দেখা। কলকাতার পুজোকেও। প্রতিমাশিল্পী নন তিনি। তুলিতেই তাঁর দুর্গা-সাধনা। পুজোসংখ্যার প্রচ্ছদ থেকে নামী সর্বজনীনের চালচিত্র এঁকেছেন অনেক। চিৎপুরের পুঁটেশ্বরী কালী মূর্তির অঙ্গরাগ (প্রতিমার রং) করেছেন বছরের পর বছর। খাবার থেকে পোশাক— সবেতে ব্রহ্মচর্য পালন করে মন্দিরে থেকেই সে কাজ করতে হয়। সিদ্ধার্থ অ্যানিমেশনের কাজও করেছেন নানা বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি সূত্রে। এক সময় চাকরি ছেড়ে গ্রাফিক্স নভেল বানানো পেশা করে নেন। আর এখন বর্ধমান জেলার লুপ্তপ্রায় পটশিল্পকে বাঁচিয়ে তোলায় উদ্যোগী হয়েছেন সিদ্ধার্থ। বলেন, ‘‘আমি ছোটবেলা পটুয়াপাড়ায় গিয়ে শিল্পীদের পাশে বসে থাকতাম। দেখতাম, কেমন ভাবে পটে দুর্গার জন্ম হচ্ছে। শৈশব ও কৈশোরের সেই স্মৃতি থেকেই এখন পট আঁকি। এ বার সেই শিল্পকেই ফুটিয়ে তুলছি আমার স্টুডিয়োর দেওয়াল জুড়ে।’’

গৃহবন্দি দুর্গার কি পুজো হবে? সিদ্ধার্থ বললেন, ‘‘আমি করোনাকালে উমাকে সংক্রমণ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে চাইছি। আমি ছাড়া আমার এক বন্ধুকেই শুধু কাছে যেতে দিই। তাই পুজোয় ঢাকঢোল বাজবে না। উপাচারও প্রচুর থাকবে না। আমার মতো করে আমি পুজো দেব। আর রং-তুলিই তো আমার নৈবেদ্য।’’ সাধারণের পক্ষে এই দুর্গাকে দেখার উপায় নেই। তবে সিদ্ধার্থ ভেবে রেখেছেন, পুজোর সময় নিজেই ছবি তুলবেন, ভিডিয়ো করবেন। তার পরে নেটমাধ্যমে দিয়ে দেবেন। প্রচারও চান না তিনি। বললেন, ‘‘আপনি জেনে ফেলেছেন তাই বললাম। কিন্তু ছবি তোলার জন্য আসতে দিতে পারলাম না বলে মনে কিছু করবেন না। সেটা করলে যে দুর্গাকে নিভৃতবাসে রাখাই হবে না। তবে পুজোর সময়, দূরত্ব বিধি মেনে কাউকে কাউকে ডাকতে পারি। তবে সর্বজনীন করব না মোটেও।’’
00:28/02:05

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.