তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে জখম হল চারজন। দলীয় নির্বাচনী কার্যালয় সহ বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙ্গচুর করা হয়েছে। আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের চারজন। আহতদের উদ্ধার করে রামপুরহাট গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় দুই পক্ষের দশ জনকে আটক করেছে মুরারই থানার পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের মুরারই ১ নম্বর ব্লকের ডুমুর গ্রামে।
জানা গিয়েছে, ওই মুরারইয়ে বিধায়ক মোশারফ হোসেনের সঙ্গে ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষের ঠাণ্ডা লড়াই রয়েছে। ডুমুর পঞ্চায়েতের ৫ নম্বর আসনে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন জান্নাত আরা মুস্তাফি। তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের টিকিট দিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে মণিরা খাতুনকে। ওই পঞ্চায়েত সমিতির ১৩ নম্বর আসনে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন বিলকিস বেগম। ওই আসনে তৃণমূলের গোঁজ হিসাবে নুরজাহান কেয়া বেগমকে দাঁড় করানো হয়েছে। তৃণমূল প্রার্থীদের দাবি, তারা বিধায়কের অনুগামী। ব্লক সভাপতির লোকজন গোঁজ প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে। এনিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকেই ডুমুরগ্রাম গ্রামে চাপা উত্তেজনা ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় সেটা বড় আকার ধারণ করে।
ওইদিন রাতে বিদায়ী প্রধান কাজী আশরাফুল গোষ্ঠীর লোকজন আলি আসগারের নেতৃত্বে তার দলের লোকজনদের সঙ্গে নিয়ে ডুমুরগ্রামে নির্দলের হয়ে প্রচার করছিল। একই সময়ে ভোট প্রচার করছিল তৃণমূল প্রার্থী জান্নাত আরা মুস্তাফির স্বামী ফাজিল মোল্লা ওরফে টনিক শেখ। দুজনে মুখোমুখি হতেই শুরু বচসা। অভিযোগ, সেই সময় একে অপরের দিকে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। ডুমুরগ্রামে আলী আসগার শেখের বাড়িতে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী কার্যালয়েও টনিক গোষ্ঠী ভাঙ্গচুর করে বলে অভিযোগ। দলীয় কার্যালয়ের পাশপাশি ওই এলাকার আরো চারটি বাড়িতে ভাঙ্গচুর চালানো হয়।
এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মুরারই থানার পুলিশ। গভীর রাতে গ্রামে পৌঁছান রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ধীমান মিত্র। পুলিশ গ্রামে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসে। রাতভোর অভিযান চালিয়ে ভাঙ্গচুর ও সংঘর্ষে জড়িত থাকার সন্দেহে দশ জনকে আটক করেছে মুরারই থানার পুলিশ। ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ বলেন, “সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি বিধায়ককে ফোন করেছিলাম। কিন্তু উনি ফোন ধরেননি। যারা ঝামেলা করেছে তারা বিধায়কের অনুগামী। ফলে পুলিশকে বলেছি আসল অপরাধীদের গ্রেফতার করুব”।
বিধায়ক মোশারফ হোসেন বলেন, “ডুমুরগ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে প্রচুর দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত গড়া হবে। এই টনিক শেখরাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। তাই তাদের প্রার্থী করা হয়েছে। কিন্তু নবাব গোষ্ঠীরা গোঁজের হয়ে ভোট করছে। তবে এই অশান্তি কাম্য নয়। পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে”।