দমদম স্টেশনের নন-ইন্টারলকিং কাজের জন্য টানা কয়েক দিন ভোগান্তির শিকার হয়েছিলেন নিত্যযাত্রীরা। কাজ মিটলেও দুর্ভোগ কাটেনি। পর পর কয়েক দিন নির্ধারিত সময়ের থেকে দেরি করে চলেছে ট্রেন। শুধু তা-ই নয়, লাইনে একের পর এক ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। সেই অভিজ্ঞতা আবারও ফিরতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শিয়ালদহের উত্তর শাখায় যাতায়াতকারী যাত্রীরা। পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, দমদমের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মের আধুনিকীকরণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য টানা ২০ দিন ব্যাহত হবে ট্রেন চলাচল।
পূর্ব রেলওয়ের তরফে বলা হয়েছে, আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে ৭ মে পর্যন্ত অর্থাৎ ৪৮০ ঘণ্টা দমদমের পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে কাজ চলবে। সেই কারণে বেশ কিছু লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে কয়েকটি ট্রেনের রুট সংক্ষিপ্ত এবং পরিবর্তন করার কথাও জানিয়েছে রেল।
কোন কোন ট্রেন বাতিল করা হয়েছে? রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ৩০৩৫১ এবং ৩০৩১৩ মাঝেরহাট-বারাসত, ৩৩৩১১ বারাসত-হাসনাবাদ, ৩০৩২২ হাসনাবাদ-বিবাদী বাগ, ৩০১৪৫ বিবাদী বাগ-কৃষ্ণনগর সিটি, ৩০৩৫৭ মাঝেরহাট-মধ্যমগ্রাম, ৩০৩৫৮ মধ্যমগ্রাম-মাঝেরহাট, ৩০৩৬১ মাঝেরহাট-হাসনাবাদ, ৩৩২৮২ হাসনাবাদ-দমদম, ৩৩২৩১ দমদম-ব্যারাকপুর, ৩৩২৩২ ব্যারাকপুর-দমদম, ৩৩২৭১ দমদম-গোবরডাঙা, ৩৩৬৮৬ গোবরডাঙা-শিয়ালদহ, ৩০৩৩৩ মাঝেরহাট-হাবড়া, ৩০৩৩২ হাবড়া-মাঝেরহাট, ৩০৩৫৩ মাঝেরহাট-দত্তপুকুর, ৩০৩১৪ দত্তপুকুর-মাঝেরহাট, ৩৩৪২৫ শিয়ালদহ-বারাসত, ৩১২২৩ শিয়ালদহ-ব্যারাকপুর, ৩০১১৬ ব্যারাকপুর-বিবাদী বাগ, ৩০১১৩ বিবাদী বাগ-ব্যারাকপুর, ৩১২৪২ ব্যারাকপুর-শিয়ালদহ এবং ৩০৩১২ বারাসত-মাঝেরহাট।
এ ছাড়াও কিছু লোকালের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। ৩০৩৩৪৬ বনগাঁ-মাঝেরহাট ট্রেন চলবে দমদম ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত। ৩০৩৪৪ বনগাঁ-মাঝেরহাট এবং ৩০৩২৪ হাসনাবাদ-মাঝেরহাট লোকাল বারাসত পর্যন্ত চলাচল করবে। ৩০১৪২ গেদে-মাঝেরহাট লোকাল চলবে রাণাঘাট এবং ৩০৭১১ লক্ষ্মীকান্তপুর-মাঝেরহাট লোকাল চলবে বালিগঞ্জ পর্যন্ত।
পাশাপাশি, ৩০৩৩১ মাঝেরহাট-হাবড়া লোকাল ছাড়বে বারাসত থেকে। দমদম ক্যান্টনমেন্ট থেকে মিলবে ৩০৩১১ মাঝেরহাট-হাবড়া লোকাল। একই সঙ্গে ৩০৩১৭ মাঝেরহাট-দত্তপুকুর লোকাল বালিগঞ্জ থেকে ছাড়বে। এই ট্রেনটি আপ কর্ড লাইন দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। যাত্রীদের ভোগান্তি হতে পারে, সে কথা জানিয়ে আগাম ক্ষমাও চেয়েছে পূর্ব রেল।
উল্লেখ্য, দমদম স্টেশনে নন-ইন্টারলকিংয়ের কাজের জন্য গত ১৬ মার্চ থেকে টানা ৫২ ঘণ্টা আংশিক ব্যাহত ছিল শিয়ালদহ (উত্তর) ডিভিশনের রেল পরিষেবা। সে সময় ১৪৩টি লোকাল বাতিল করা হয়েছিল। পাশাপাশি বাতিলের তালিকায় ছিল কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেনও। ১৮ মার্চ ভোর থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার কথা রেল জানালেও বাস্তবে তা হয়নি। কয়েক দিন অনিয়মিত ছিল ওই লাইনের ট্রেন চলাচল। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। আবারও একাধিক ট্রেন বাতিল থাকায় নিত্যযাত্রীরা সমস্যায় পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।