করোনার প্রভাব পড়ল এবার কয়লা উৎপাদন ক্ষেত্রেও। মহামারি বাড়বাড়ন্তে এই মূহূর্তে বেশিরভাগ খনিতে ৫০ শতাংশ শ্রমিক নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে। ফলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করাই কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসিএলের কাছে। এই অর্থবর্ষে ৫৫.০২ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ইসিএলের। সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত যেখানে ২০.৩ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন হওয়ার কথা সেখানে উৎপাদন হয়েছে ১৭ মিলিয়ন টন। ১৬ শতাংশ উৎপাদন কম হয়েছে। তাই বিলম্ব না করে দ্রুত নতুন ওসিপি বা খোলামুখ খনিগুলি চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনা আবহে ও লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই কয়লা উত্তোলন (Coal Production) স্বাভাবিক রেখেছিল ইসিএল। কিন্তু করোনা ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিনই জেলায় ১৫০ জনের মতো মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। তার মধ্যে রয়েছেন খনি শ্রমিকরাও। তবে শুধু শ্রমিক মহলে নয় ইসিএলের সদর দপ্তরেও বহু আধিকারিক, গাড়ির চালক-সহ নানা অফিসার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। শেষ একমাসে রানিগঞ্জ এলাকার সাতগ্রাম এরিয়া, কাজোড়া এরিয়া ও খোট্টাডিহি কোলিয়ারিতে এই মহামারির বাড় বাড়ন্ত দেখা দিয়েছে। তাই কর্মীদের ৫০ শতাংশ এখন কাজ করছেন। এতেই সরাসরি প্রভাব পড়েছে কয়লা উৎপাদনের ক্ষেত্রে।
কয়লা উত্তোলনকারী রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা ইসিএল (ECL) প্রতি বছর উৎপাদন বাড়িয়ে রেকর্ড গড়েছে। গত অর্থবর্ষেই ৫০.০৪ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করে রেকর্ড করেছিল। যার মধ্যে ৪১ মিলিয়ন টন কয়লাই উত্তোলন হয়েছিল খোলামুখ খনি থেকে। ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে খোলামুখ খনিই ভরসা। তাই নতুন নতুন খোলামুখ খনি খুলে কয়লা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসিএল। ইসিএলের সিএমডির কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “আমরা উৎপাদনের লক্ষ্যামাত্রা পূরণ করতে একাধিক ওসিপি, প্যাচ দ্রুত চালু করতে চলেছি। যে ঘাটতি রয়েছে তা আশাকরি পূরণ হবে।” জানা গিয়েছে, সাতগ্রামের নিমচায় ২ টি, কুমারডিহি বি নাকরাকোন্দায় ১ টি, কেন্দা, বনবাহল, রাজমহলে আরও দু’টি করে ছোট খোলামুখ খনি বা প্যাচ তৈরি হবে। খোট্টাডিহিতে কন্টিনিউয়াস মাইনার প্রকল্প চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই মাইনটির চিনের সঙ্গে চুক্তি থাকলেও ভারতীয়রাই সেই মাইন চালু করতে চলেছে। তবে করোনা এখন কয়লাক্ষেত্রেও উৎপাদনের বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মানছেন ইসিএলের কর্তারা।