আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী তৎপরতায় মদত দিচ্ছে ভারত! পাক সেনার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দফতরের (আইএসপিআর) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধরি এই অভিযোগ করেছেন।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধরি রবিবার বলেন, ‘‘আফগানিস্তান সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, আপনাদের দেশের মাটি পাক বিরোধী সন্ত্রাসের জন্য ভারতকে ব্যবহার করতে দেবেন না।’’
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটক হত্যাকাণ্ডের পরে কড়া নিন্দা করেছিলেন আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালিবান নেতৃত্ব। এর পর ৭ মে রাতে পাকিস্তানের ন’টি সন্ত্রাসবাদী ঠিকানায় ভারতীয় সেনার অপারেশন সিঁদুর এবং তার জেরে দু’পক্ষের সামরিক সঙ্ঘাত হয়। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আফগান প্রধানমন্ত্রী হাসান আখু্ন্দের সরকার পুরোপুরি নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে।
২০২১ সালের অগস্ট মাসে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সময় কয়েক সপ্তাহের গৃহযুদ্ধে ক্ষমতা দখল করেছিল তালিবান। সামরিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে পাক সেনার মদতই ছিল সেই চমকপ্রদ সাফল্যের কারণ। কিন্তু তার পরে গত চার বছরে ধারাবাহিক ভাবে ইসলামাবাদ-কাবুল সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। এমনকি, খাইবার পাখতুনখোয়ায় সক্রিয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) ডেরা ধ্বংসের অছিলায় আফগানিস্তানের মাটিতে বিমানহামলা চালিয়েছে পাক বায়ুসেনা।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে পাক যুদ্ধবিমানের হামলায় নারী, শিশিু-সহ ৪৬ জন গ্রামবাসীর মৃত্যুর পরে কাবুলের পাশে দাঁড়িয়ে কড়া ভাষায় নিন্দা করেছিল ভারত। অপারেশন সিঁদুরেক পরে গত ১৫ মে তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে কথা বলেছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আফগান মুলুকে তালিবান ফের ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম মন্ত্রী পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি কথা হল। তার আগে গত ২৭ এপ্রিল, পহেলগাঁও হামলার ছ’দিনের মাথায় তালিবান সরকারের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের বিশেষ প্রতিনিধি তথা যুগ্ম সচিব আনন্দ প্রকাশ। নয়াদিল্লি-কাবুলের এই সখ্য পাকিস্তানকে চাপে ফেলেছে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।