ইউরো কাপের ‘বড় ম্যাচ’ হল। কিন্তু সেই ম্যাচ হয়ে দাঁড়াল একপেশে। ইটালিকে ১-০ গোলে হারাল স্পেন। একমাত্র গোলটিও হয়েছে আত্মঘাতী। কিন্তু স্কোরলাইন দেখে কোনও ভাবেই এই ম্যাচের নির্যাস বোঝা যাবে না। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্পেন দাঁড়াতে দিল না ইটালিকে। বল নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে শট, সবেতেই প্রতিপক্ষের থেকে অনেক যোজন এগিয়ে ছিল তারা। রিকার্ড কালাফিয়োরির আত্মঘাতী গোল ম্যাচে তফাত গড়ে দিয়েছে।
আগের ম্যাচে ক্রোয়েশিয়াকে প্রথমার্ধে তিন গোল দিয়ে খেলা শেষ করে দিয়েছিল স্পেন। এ দিন ইটালির গোলের নীচে জিয়ানলুইগি ডোনারুম্মা না থাকলে লজ্জা বাঁচাতে পারত না চার বারের বিশ্বজয়ীরা। অন্তত ছ’টি নিশ্চিত গোল বাঁচালেন ডোনারুম্মা। না হলে স্পেনের বিরুদ্ধে বড় লজ্জার সামনে পড়তে হত ইটালিকে। গোটা ম্যাচে ইটালির খেলা দেখে মনেই হল না তারা চার বারের বিশ্বজয়ী। স্পেনের তরুণ খেলোয়াড়দের সামনেও নাকানি-চোবানি খেতে দেখা গেল ইটালির অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের।
প্রথমার্ধেই অন্তত তিন গোলে এগিয়ে যেতে পারত স্পেন। সুযোগ নষ্টের কারণে কোনওটিই হয়নি। ইটালির বিরুদ্ধে শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তুলে দেয় স্পেন। একের পর এক আক্রমণ হতে থাকে ইটালির বক্সে। দ্বিতীয় মিনিটেই গোল বাঁচান জিয়ানলুইগি ডোনারুম্মা। বাঁ দিকে নিকো উইলিয়ামস বল পেয়েছিলেন। বক্সের মাঝে ভাসানো ক্রস পেয়েছিলেন অরক্ষতি থাকা পেদ্রি। তাঁর সোজা হেড কোনও মতে আঙুল ঠেকিয়ে বারের উপর দিয়ে বার করে দেন ডোনারুম্মা।
১০ মিনিটের মাথায় আবার একটি সুযোগ নষ্ট করে স্পেন। এ বার আলভারো মোরাতা পাস দিয়েছিলেন উইলিয়ামসকে। এখানেও পুরোপুরি ফাঁকায় থাকা সত্ত্বেও বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি উইলিয়ামস। স্পেনের চাপের মাঝে রক্ষণাত্মক কৌশলে চলে গিয়েছিল ইটালি। তবু মাঝেমাঝে তারাও উঠে আসছিল প্রতি আক্রমণে। কিন্তু সেগুলি এতটাই পরিকল্পনাহীন যে স্পেনের খেলোয়াড়দের আটকে দিতে কোনও সমস্যা হয়নি।
২৪ মিনিটে আবার ডোনারুম্মার সৌজন্যে বেঁচে যায় ইটালি। দূর থেকে শট মেরেছিলেন ফ্যাবিয়ান রুইজ়। ডোনারুম্মা তা বাঁচিয়ে দেন। চার মিনিট পরে আবার স্পেনের সুযোগ নষ্ট। এ বার দানি কার্ভাহালের থেকে পাস পেয়ে রদ্রির শট ইটালির ডিফেন্স রুখে দেয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন পেদ্রি। বাঁ দিক থেকে মার্ক কুকুরেয়ার পাস পেয়েছিলেন। চলতি বলে পেদ্রি শট নিলেও তা গোলের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৫৫ মিনিটে এগিয়ে যায় স্পেন। বাঁ দিক থেকে নিচু ক্রস করেছিলেন উইলিয়ামস। ঝাঁপিয়ে সেই বল বার করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ডোনারুম্মা। কিন্তু তাঁর আঙুলে লাগে। পাশেই ছিলেন রিকার্ডো কালাফিয়োরি। কিছু বোঝার আগেই তাঁর বাঁ হাঁটুতে লেগে বল জালে জড়িয়ে যায়।
৫৮ মিনিটে মোরাতার শট বাঁচান ডোনারুম্মা। দু’মিনিট পরে লেমিনে ইয়ামালের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৭০ মিনিটে অল্পের জন্য বেঁচে যায় ইটালি। উইলিয়ামসের বাঁ পায়ের বাঁকানো শট বারে লাগে।