দীপাবলির রাতে বাজি ফাটানোর ‘অপরাধে’ শিশু, মহিলা-সহ বেশ কয়েক জনকে মারধরের অভিযোগ উঠল খোদ জেলা পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার পথে নেমে প্রতিবাদ জানালেন ‘আক্রান্তেরা।’ পুলিশ সুপারের ব্যবহারের নিন্দায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। যদিও এসপি মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
কোচবিহার শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে রেলঘুমটি এলাকায় পুলিশ সুপারের বাংলো। অভিযোগ, সোমবার দীপাবলির রাতে হঠাৎ বাংলো থেকে বেরিয়ে এসে কয়েক জনের উপর ‘চড়াও হন’ পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। পুলিশ সুপার পুলিশকর্মীদের নিয়ে তিনি ‘ডান্ডা’ হাতে মারধর করেন বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, পুলিশ সুপার মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, গভীর রাত পর্যন্ত শব্দবাজি ফেটেছে। তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা বাধা দিয়েছেন মাত্র।
‘আক্রান্তদের’ এক জনের কথায়, ‘‘পুলিশ সুপার হাফ প্যান্ট, স্যান্ডো গেঞ্জি আর মাথায় ফেট্টি বাঁধা অবস্থায় এলাকার কয়েকটি শিশু, একজন মহিলা এবং এক জন স্কুলশিক্ষককে মারধর করেছেন।’’ এলাকাবাসীর দাবি, পুলিশ সুপারের বাংলোর অদূরে কয়েকটি শিশু বাজি ফাটাচ্ছিল। হঠাৎ পুলিশ সুপার কয়েক জন পুলিশকর্মীকে নিয়ে বেরিয়ে সকলকে মারধর করেন। তাঁদের দাবি, কোনও পুলিশকর্মীর পরনে ইউনিফর্ম ছিল না। কোনও মহিলা পুলিশকর্মীও ছিলেন না। তার পরেও মহিলাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে।

ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার স্থানীয় বাসিন্দারা পথ অবরোধ করেন। তাঁরা পুলিশ সুপারের বদলির দাবি করেন। উত্তেজনা ছড়ালে ঘটনাস্থলে যায় কোতায়ালি থানার পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক জনের উপর লাঠিচার্জ করে তারা। আটক হন বেশ কয়েক জন।
অন্য দিকে, শুভেন্দু দাবি করেছেন, ‘‘অপ্রকৃতস্থ অবস্থায় মহিলা এবং শিশুদের মারধর করেছেন পুলিশ সুপার।’’ সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘‘কয়েক দিন আগে জলপাইগুড়ির সার্কিট বেঞ্চের অনুমতিতে আমি কোচবিহারে যাই। এসপির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। তখন এই কীর্তিমান পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে খাগড়াবাড়ি এলাকায় জেহাদিদের দ্বারা আমাকে আক্রান্ত হতে হয়।’’
পুলিশ সুপার মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, নিয়ম ভেঙে গভীর রাত পর্যন্ত বাজি ফাটানো হয়েছে। তার পর ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। দ্যুতিমানের কথায়, ‘‘আমরা ভেবেছি, এই শেষ হবে, এই শেষ হবে… কিন্তু রাত ১০টা বেজে যায়, ১১টা বেজে যায়, বাজির দাপট থামেনি। (রাত) ১টা অবদি প্রতিনিয়ত বাজি ফাটিয়েছে। আমার স্ত্রী ‘কাউন্ট’ করেছে একসঙ্গে ৬০টা পর্যন্ত বাজি ফেটেছে। আমার নিরাপত্তারক্ষীরা গিয়ে বারণ করেছে। কেউ কোনও কথা গ্রাহ্য করেননি। তবে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। আমার কুকরগুলো চিৎকার করে পাগল হয়ে যাচ্ছিল।’’