এতদিন নিজের কেন্দ্রের ভোট নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। বালুরঘাট থেকে এক ফোঁটাও চোখ সরাননি। এবার সেখানকার ভোট শেষ হতেই অন্য কেন্দ্রে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর সভায় যোগ দিতে বর্ধমানে ছুটে এসেছিলেন সুকান্ত মজুমদার। স্বাভাবিকভাবে ভরা গরমের দুপুরে বাঙালির মহাতৃপ্তির পান্তা ভাতেই সুকান্তর অতিথি আপ্যায়ন করলেন দিলীপ ঘোষ। একই সঙ্গে গলা মিলিয়ে তৃণমূলী সন্ত্রাসে বিজেপি জল ঢালবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন।
এই গরমে বাঙালির প্রিয় খাবার গুলির মধ্যে একটি হল পান্তা ভাত। আর পান্তা ভাতের সঙ্গে আছে মাছ ভাজা এবং মন্তেশ্বর বাজার থেকে আনা টাটকা কলমি শাক ভাজা, আচার কাঁচা পেঁয়াজ এবং ছাতু। হ্যাঁ দুপুরের এটাই ছিল দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারের খাবারের মেনু। সেই মেনু দুজনেই নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্টে ছবি পোস্ট করেছেন। সঙ্গে লিখেছেন তারা আজ আড্ডাও মেরেছেন জব্বর। সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, আমরা যারা এই রাজ্যে সমস্ত লোকসভা কেন্দ্রে পদ্ম ফোটানো শপথ নিয়েছি, গরম ভাতে জল ঢালার মতোই তৃণমূলের সন্ত্রাসের গরম হাওয়ায় জল ঢালবে বিজেপি। এই একই কথা লিখেছেন দিলীপ ঘোষও। দিলীপ ঘোষ আরও লিখেছেন প্রচন্ড গরমের হাত থেকে বাঁচাতে লু কাটাতে ভরসা পান্তা ভাত। কৃষকরাও এই তপ্ত দুপুরে ধান ক্ষেতে বসে পান্তা দিয়েই মাধ্যাহ্ন ভোজ সারেন। আমরা যারা এ রাজ্যে সমস্ত লোকসভা কেন্দ্রে পদ্ম ফোটানো শপথ নিয়েছি সুস্থ থাকতে আমাদের দুপুরের খাবারও তাই পান্তা।
তবে দুজনেই একসাথে লিখেছেন, সাধারণত কাজের ব্যস্ততায় দেখা-সাক্ষাৎ আমাদের হয় না বললেই চলে। বহুদিন পর আজ নির্বাচনী প্রচারের ফাঁকে একসঙ্গে বসে খাওয়া হল।
শুক্রবার বঙ্গ সফরে এসেছিলেন মোদী। তৃতীয় দফার ভোটের আগে পরপর তিনটি জনসভা করেন তিনি। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে বর্ধমানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এদিন দুই বর্ধমানের বিজেপি প্রার্থীর হয়ে জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার বেলা এগারোটা নাগাদ বর্ধমানে পৌঁছোন মোদী। তার কিছুক্ষণের মধ্যে তালিতে সাঁই মাঠে সভা করেন। বর্ধমানের পর তিনি বীরভূমের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখানে বিজেপি প্রার্থী পিয়া সাহার সমর্থনে সভা ছিল তাঁর। মোদী বর্ধমান থেকে চলে যাওয়ার পরই দিলীপ, সুকান্ত দুজন পান্তা দিয়ে মাধ্যাহ্ন ভোজ সরেন। আর পান্তা দিয়েও তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক তোপ দাগেন বঙ্গ বিজেপির দুই নেতা।
বলাই বাহুল্য, বারবার দাবি করা হয়ে থাকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও দিলীপ ঘোষের মধ্যে তেমন সুসম্পর্ক নেই। এমনকি লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা নিয়েও দ্বিমত ছিল। কিন্তু সেই গুঞ্জনেও পান্তার জল ঢাললেন আজ বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন ও বর্তমান সেনাপতিরা।