প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর স্বপ্ন ফেরি করেছিলেন ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র। সুতরাং গোটা দেশকে সবদিক দিয়ে প্রযুক্তি–নির্ভর করা হবে। আবার তিনিই ঘোষণা করেছিলেন, ভারত ক্রমেই ডিজিটাল পথে অগ্রসর হচ্ছে। সাধারণ মানুষের আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে সবথেকে বেশি যে সেক্টরের সংযোগ, সেটি হল ব্যাঙ্ক। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন, ভারতের ভবিষ্যৎ ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং। এবার সেখানেও বঞ্চনার শিকার হল বাংলা বলে অভিযোগ।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? দেশের ব্যাঙ্কের চিরাচরিত শাখার পরিবর্তে এবার থেকে নতুন করে স্থাপন করা হবে ডিজিটাল ব্যাঙ্কের শাখা। এমনকী গোটা দেশে এমন মোট ৭৫টি ইউনিট স্থাপন করার কাজ চলছে। সেখানে কোন রাজ্যে কতগুলি ডিজিটাল ব্যাঙ্ক স্থাপন করা হবে তার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। বিস্ময়কর হল, জনসংখ্যা অনুযায়ী রাজ্যগুলিকে ডিজিটাল ব্যাঙ্ক প্রদানের পদ্ধতি তালিকায় অনুসরণ করা হয়নি। আর সেই কারণে বৈষম্যের শিকার হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। অথচ ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলি ওই তালিকায় ঢুকে পড়েছে। তাই উঠেছে বৈষম্যের অভিযোগ।
কেমন বঞ্চনার শিকার বাংলা? প্রাথমিক পর্বে রাজ্যে মাত্র দুটি ডিজিটাল ব্যাঙ্ক স্থাপন করা হবে। একটি উত্তর ২৪ পরগনায়, অন্যটি দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে। সেখানে ছোট রাজ্য ত্রিপুরাতেও হবে দুটি এমন ব্যাঙ্ক। এছাড়া অসম, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, নাগল্যান্ডও দুটি করে ডিজিটাল ব্যাঙ্ক পাচ্ছে। অর্থাৎ এইসব স্বল্প জনসংখ্যার রাজ্যগুলির সঙ্গে একাসনে থাকল বাংলা। অথচ বাংলা এবং বিহার মিলিয়ে জনসংখ্যা ২০ কোটির বেশি। বিহারও পেয়েছে দুটি ডিজিটাল ব্যাঙ্ক।
কারা বেশি ডিজিটাল ব্যাঙ্ক পেল? তবে তথ্য বলছে—কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলিতে তিন থেকে চারটি করে ডিজিটাল ব্যাঙ্ক স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল ব্যাঙ্কের মাধ্যমে আগামী দিনে শুধুই ব্যাঙ্কিং সংক্রান্ত লেনদেন নয়, ঋণ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজও করা হবে। আর কাগজপত্র জমা করতে হবে না। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, দেশ–বিদেশের শিল্পলগ্নির ক্ষেত্রে ডিজিটাল ব্যাঙ্কিংয়ের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে বাংলায় মাত্র দু’টি এমন ব্যাঙ্ক স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় রাজ্যের শিল্পায়ন প্রক্রিয়া অসুবিধার মুখে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।