সপ্তাহে তিন বার ডায়ালিসিস, মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন বাবা, আইপিএল খেলতে খেলতে ‘চিকিৎসা’ করছেন ছেলে প্রভসিমরন

রবিবার সন্ধ্যায় পটিয়ালার একটি বাড়িতে গোটা পরিবারই মন দিয়ে টিভি দেখছিল। সেখানে চলছিল আইপিএল। খেলছিলেন সেই বাড়িরই ছেলে প্রভসিমরন সিংহ। অল্পের জন্য শতরান পাননি। দলকে জেতাতে সাহায্য করেছেন। প্রভসিমরনের এক-একটি ইনিংসই এখন সঞ্জীবনী তাঁর বাবা সর্দার সুরজিৎ সিংহের কাছে। শয্যাশায়ী সর্দার মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন প্রতিনিয়ত।

সুরজিতের দু’টি কিডনিই ক্রমশ বিকল হয়ে পড়ছে। সপ্তাহে তিন বার ডায়ালিসিস নিতে হচ্ছে তাঁকে। অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। এমন অবস্থায়, প্রভসিমরন ভাল খেললে খুশি হচ্ছেন সুরজিৎ। সোমবার সকালেও নিজের দাদা সতবিন্দরপাল সিংহকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আদরের ‘সিম্মু’ (প্রভসিমরনের ডাকনাম) ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়েছে কি না।

সতবিন্দর এক ওয়েবসাইটে বলেছেন, “প্রভসিমরন ভাল খেললেই একমাত্র ভাইকে হাসতে দেখি। সপ্তাহে তিন বার ডায়ালিসিস নিতে হয়। ও যে কষ্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, দাদা হিসাবে সেটা চোখে দেখা যায় না। ডায়ালিসিসের সময় ডাক্তার এলে আমি বাড়ির বাইরে চলে যায়। রোজ প্রার্থনা করি, যাতে ওর খারাপ কিছু না হয়।”

সতবিন্দরপাল জানেন না তাঁর ছোট ভাই কত দিন বাঁচবেন। কিন্তু প্রভসিমরন যে তাঁর মুখে হাসি ফোটাতে পারছেন সেটা ভেবেই তিনি খুশি। বললেন, “পঞ্জাবের ম্যাচ থাকলেই ওকে বসার ঘরে নিয়ে আসি। একসঙ্গে ম্যাচ দেখি। ক্যামেরায় সিম্মুকে দেখলেই ও হাসে। সিম্মু ভাল খেললে জোরে জোরে হাসতে থাকে। সেই মুহূর্তে ও ভুলে যায় কতটা কষ্ট পাচ্ছে।”

প্রভসিমরন শতরান করতে না পারায় খুশি হতে পারেননি তাঁর বাবা। সতবিন্দরপাল বলেছেন, “সোমবার সকালে সিম্মু ভিডিয়ো কল করেছিল। সুরজিতের খোঁজ নিচ্ছিল। কেন শতরানের অত কাছে থাকা সত্ত্বেও খারাপ শট খেলে আউট হল, তা নিয়ে আমার ভাই তখনই ওকে বকা দেয়। আমাকেই গিয়ে থামাতে হয়।”

পঞ্জাব শিবিরে যোগ দেওয়ার আগে ভাই অনমোলপ্রীতকে প্রভসিমরন কথা দিয়েছিলেন, এই মরসুমে দু’টি শতরান করবেন। বাবা, জেঠু এবং কোচ রিকি পন্টিংকেও একই কথা দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ না হলেও, প্রভসিমরনের ইনিংস পঞ্জাব শিবিরে এনে দিয়েছে টাটকা বাতাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.