ওয়াংখেড়েতে ধোনি-ধমাকা, রোহিতের শতরান ব্যর্থ, আইপিএলের ‘এল ক্লাসিকো’য় জিতল চেন্নাই

আইপিএলের ‘এল ক্লাসিকো’ বলা হয় এই ম্যাচকে। সেই ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ঘরের মাঠে এসে দাদাগিরি দেখাল চেন্নাই সুপার কিংস। আরও ভাল করে বললে, দাদাগিরি দেখালেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। তাঁর দাদাগিরিতে ঢাকা পড়ে গেল রোহিত শর্মার শতরানও। যে মাঠে তাঁর বিশ্বকাপ জেতানো কালজয়ী ছয় রয়েছে, সেই মাঠে শেষ ওভারে তাঁর ব্যাট থেকে ছয়ের হ্যাটট্রিক দেখা গেল। সমর্থকদের পয়সা উসুল করে দিলেন মাহি। পাল্টা রোহিত শর্মা একা লড়াই করলেও মুম্বইকে জেতাতে পারলেন না। চেন্নাইয়ের তোলা ২০৬/৪ রানের জবাবে মুম্বই থেমে গেল ১৮৬/৬ রানে। চেন্নাই জিতল ২০ রানে।

ওয়াংখেড়ে এত বছর ধরে মুম্বইয়ের ঘরের মাঠ। কিন্তু মহেন্দ্র সিংহ ধোনি যদি খেলতে আসেন, তা হলে কোনও মাঠই কোনও দলের ঘরের মাঠ নয়। তাই ওয়াংখেড়ে নীল জার্সির পাশাপাশি বিরাট সংখ্যায় দেখা গেল হলুদ জার্সিও। চেন্নাইয়ের ব্যাটিংয়ের সময় তাল মিলিয়ে চিৎকার করে গেলেন তাঁরা। তবে আসল মুহূর্ত আসার জন্য অপেক্ষা করতে হল প্রায় দেড় ঘণ্টা। আরও ভাল করে বললে, ১৯.২ ওভার পর্যন্ত। কারণ, তার পরেই তো ব্যাট করতে নামলেন ধোনি।

চেন্নাইয়ের ইনিংসের শেষ দিকে বার বার সাজঘরের দৃশ্য তুলে ধরা হচ্ছিল। সেখানে দেখা যাচ্ছিল, প্যাড-হেলমেট পরে ব্যাট হাতে তৈরিই আছেন ধোনি। প্রতি বার সেই ছবি দেখানোর সময় উত্তাল হয়ে উঠছিল গ্যালারি। ধোনি নিজেও যেন অধৈর্য হয়ে পড়ছিলেন। মাহেন্দ্রক্ষণ এল ১৯.২ ওভারে। হার্দিক পাণ্ড্যের বলে ড্যারিল মিচেল বাউন্ডারির ধারে ধরা পড়তেই ওয়াংখেড়ে উত্তাল। তবে মুম্বই নয়, চেন্নাইয়ের জন্য।

https://platform.twitter.com/embed/Tweet.html?dnt=false&embedId=twitter-widget-0&features=eyJ0ZndfdGltZWxpbmVfbGlzdCI6eyJidWNrZXQiOltdLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X2ZvbGxvd2VyX2NvdW50X3N1bnNldCI6eyJidWNrZXQiOnRydWUsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdHdlZXRfZWRpdF9iYWNrZW5kIjp7ImJ1Y2tldCI6Im9uIiwidmVyc2lvbiI6bnVsbH0sInRmd19yZWZzcmNfc2Vzc2lvbiI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfZm9zbnJfc29mdF9pbnRlcnZlbnRpb25zX2VuYWJsZWQiOnsiYnVja2V0Ijoib24iLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X21peGVkX21lZGlhXzE1ODk3Ijp7ImJ1Y2tldCI6InRyZWF0bWVudCIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfZXhwZXJpbWVudHNfY29va2llX2V4cGlyYXRpb24iOnsiYnVja2V0IjoxMjA5NjAwLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X3Nob3dfYmlyZHdhdGNoX3Bpdm90c19lbmFibGVkIjp7ImJ1Y2tldCI6Im9uIiwidmVyc2lvbiI6bnVsbH0sInRmd19kdXBsaWNhdGVfc2NyaWJlc190b19zZXR0aW5ncyI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdXNlX3Byb2ZpbGVfaW1hZ2Vfc2hhcGVfZW5hYmxlZCI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdmlkZW9faGxzX2R5bmFtaWNfbWFuaWZlc3RzXzE1MDgyIjp7ImJ1Y2tldCI6InRydWVfYml0cmF0ZSIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfbGVnYWN5X3RpbWVsaW5lX3N1bnNldCI6eyJidWNrZXQiOnRydWUsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdHdlZXRfZWRpdF9mcm9udGVuZCI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9fQ%3D%3D&frame=false&hideCard=false&hideThread=false&id=1779540423800988082&lang=en-gb&origin=http%3A%2F%2Fmgmt-abp.ttef.in%2Fwp-admin%2Fadmin.php%3Fpage%3Dworkspace_create&sessionId=bab00cbabd0f0073a8e5e97e5750d99ffcf6c6ee&theme=light&widgetsVersion=2615f7e52b7e0%3A1702314776716&width=550px

ধোনি মাঠে নামার মুহূর্তে ডেসিবেল কত মাত্রায় ছুঁয়েছিল তা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। তবে ধোনি ছিলেন নির্লিপ্ত। শান্ত ভাবে এগিয়ে এলেন ক্রিজ়ে। স্টান্স নিলেন। উল্টো দিকে তৈরি হার্দিক। তার পরের তিনটি বলে যা হল তা ধোনির অতি বড় সমর্থকও বিশ্বাস করতে পারেননি। পর পর তিন বলে তিনটি ছয়। যে হার্দিক মোটামুটি নিয়ন্ত্রিত বল করছিলেন, তাঁকেই অবলালীয় মাঠের বাইরে পাঠালেন ধোনি। তা-ও তিন-তিন বার। প্রথমে হাফ ভলি বলে সোজা ছয় মারলেন। ৪৩ মিটার উঁচু দিয়ে ৮১ মিটার দূরে পড়ল। এর পর মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছয়। তার পর এল ফুলটস। ফ্লিক করে ডিপ ফাইন লেগের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে পাঠালেন ধোনি। চতুর্থ বল ঠিক মতো ব্যাটে লাগলে সেটিও ছয় হত। হার্দিক ভাবতেই পারেনি এমন সময় আসতে চলেছে। একার হাতে চেন্নাইয়ের স্কোর দুশো পার করিয়ে দিলেন ধোনি। চার বলে ২০ রানে অপরাজিত থাকলেন।

তার আগে চেন্নাইয়ের ভিত শক্ত করে দিয়েছিলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড় এবং শিবম দুবে। ওপেন করতে কেন রুতুরাজের জায়গায় অজিঙ্ক রাহানেকে নামানো হল তা জানা নেই। রাচিন রবীন্দ্রের সঙ্গে রাহানে শুরুতে কিছু করতেই পারলেন না। অকারণে বেশি বল খেলে ফেললেন। রাহানে ফেরার পর রুতুরাজ এসে প্রথম থেকেই নিজস্ব ভঙ্গিতে চালিয়ে খেলা শুরু করলেন। তাঁর ব্যাটিংয়ের সামনে মুম্বইয়ের কোনও বোলারই দাঁড়াতে পারেননি।

তবে উল্টো দিকে রাচিন সঙ্গত দিতে পারেননি। তিনি ফেরার পর আবার বাড়ল চেন্নাইয়ের রানের গতি। অতীতে মুম্বইয়ের হয়ে খেলা শিবম ওয়াংখেড়েটা ভালই চেনেন। এটা তাঁর রাজ্য দলের মাঠও। পিচের সব সুবিধা কাজে লাগিয়ে চালিয়ে খেলতে শুরু করলেন। তৃতীয় উইকেটে ৯০ রান উঠল। রুতুরাজ ফেরার পরেও শিবমের দাপট কমেনি। তিনিও চালিয়ে খেলে অর্ধশতরান করলেন। তবে শেষ দিকে সব আলো একাই কেড়ে নিলেন ধোনি।

https://platform.twitter.com/embed/Tweet.html?dnt=false&embedId=twitter-widget-1&features=eyJ0ZndfdGltZWxpbmVfbGlzdCI6eyJidWNrZXQiOltdLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X2ZvbGxvd2VyX2NvdW50X3N1bnNldCI6eyJidWNrZXQiOnRydWUsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdHdlZXRfZWRpdF9iYWNrZW5kIjp7ImJ1Y2tldCI6Im9uIiwidmVyc2lvbiI6bnVsbH0sInRmd19yZWZzcmNfc2Vzc2lvbiI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfZm9zbnJfc29mdF9pbnRlcnZlbnRpb25zX2VuYWJsZWQiOnsiYnVja2V0Ijoib24iLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X21peGVkX21lZGlhXzE1ODk3Ijp7ImJ1Y2tldCI6InRyZWF0bWVudCIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfZXhwZXJpbWVudHNfY29va2llX2V4cGlyYXRpb24iOnsiYnVja2V0IjoxMjA5NjAwLCJ2ZXJzaW9uIjpudWxsfSwidGZ3X3Nob3dfYmlyZHdhdGNoX3Bpdm90c19lbmFibGVkIjp7ImJ1Y2tldCI6Im9uIiwidmVyc2lvbiI6bnVsbH0sInRmd19kdXBsaWNhdGVfc2NyaWJlc190b19zZXR0aW5ncyI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdXNlX3Byb2ZpbGVfaW1hZ2Vfc2hhcGVfZW5hYmxlZCI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdmlkZW9faGxzX2R5bmFtaWNfbWFuaWZlc3RzXzE1MDgyIjp7ImJ1Y2tldCI6InRydWVfYml0cmF0ZSIsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfbGVnYWN5X3RpbWVsaW5lX3N1bnNldCI6eyJidWNrZXQiOnRydWUsInZlcnNpb24iOm51bGx9LCJ0ZndfdHdlZXRfZWRpdF9mcm9udGVuZCI6eyJidWNrZXQiOiJvbiIsInZlcnNpb24iOm51bGx9fQ%3D%3D&frame=false&hideCard=false&hideThread=false&id=1779554668856984058&lang=en-gb&origin=http%3A%2F%2Fmgmt-abp.ttef.in%2Fwp-admin%2Fadmin.php%3Fpage%3Dworkspace_create&sessionId=bab00cbabd0f0073a8e5e97e5750d99ffcf6c6ee&theme=light&widgetsVersion=2615f7e52b7e0%3A1702314776716&width=550px

মুম্বই ২০৭ রান তাড়া করতে পারবে কি না, তা অনেকাংশে নির্ভর করছিল রোহিত শর্মা এবং ঈশান কিশনের ওপেনিং জুটির উপরে। শুরুটা তারা ভালই করেছিলেন। প্রথম দু’ওভারে হাত খুলতে না পারলেও, পরের তিন ওভার থেকে এল ৪০ রান। রবীন্দ্র জাডেজা আসার পর রানের গতি কিছুটা কমলেও ১০-এর উপর রান রেট ছিল। একটা ওভারেই সব ঘুরে গেল। অষ্টম ওভারে মাথিশা পাথিরানাকে নিয়ে আসেন রুতুরাজ। সেই ওভারের প্রথম বলেই ঈশানকে আউট করেন শ্রীলঙ্কার বোলার।

মরিয়া হয়ে মুম্বই তিনে নামিয়েছিল সূর্যকুমার যাদবকে। ক্রিজ়ে টিকলেন মাত্র দু’টি বল। তবে সূর্যকুমারের ক্যাচ চলতি আইপিএলের সেরা ক্যাচ হতেই পারে। পাথিরানার বলে তুলে দিয়েছিলেন থার্ডম্যানে। আর একটু হলেই ছয় হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু মুস্তাফিজুর সেই ক্যাচ ধরেন। ভারসাম্য সামলাতে না পেরে বল উপরে ছুড়ে দিয়েছিলেন। বাউন্ডারির ভেতরে একটি পা রেখে ভারসাম্য ফিরিয়ে আবার মাঠের ভেতরে এসে ক্যাচ লোফেন। রিভিউ দেখার পর আউট দেওয়া হয়।

পর পর দু’টি উইকেট হারিয়ে বেসামাল হয়ে যাওয়া মুম্বইয়ের হাল ধরেন রোহিত এবং তিলক বর্মা। দু’জনে তৃতীয় উইকেটে ৬০ রান যোগ করেন। দুই ক্রিকেটারই আগ্রাসী হয়ে খেলছিলেন। কিন্তু আবারও পাথিরানাকে এনে ধাক্কা দিলেন রুতুরাজ। দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম বলেই পাথিরানা ফেরালেন তিলককে। হার্দিক নিজেকে তুলে আনেন পাঁচ নম্বরে। তবে মুম্বই অধিনায়কের ব্যক্তিগত ফর্ম এতটাই খারাপ যাচ্ছে যে কোনও ভাবেই সমালোচনা এড়ানো যাচ্ছে না। কোনও মতে চারটি বল খেললেন। পঞ্চম বল উড়িয়ে দিতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন। তা-ও আবার তুষার দেশপান্ডের বলে, যাঁকে তার আগে যথেচ্ছ পিটিয়েছেন মুম্বইয়ের ব্যাটারেরা।

শেষ দিকে মুস্তাফিজুরকে দু’টি ছয় মেরে আশা জাগিয়েছিলেন টিম ডেভিড। তবে অতি আগ্রাসী হওয়ার মূল্য চোকাতে হল বাউন্ডারির ধারে ক্যাচ দিয়ে। রোহিত শেষ পর্যন্ত খেলে গেলেন। শেষ ওভারে শতরানও করলেন। কিন্তু আরও বেশি স্ট্রাইক না পাওয়ার মূল্য চোকাতে হল তাঁকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.