শহরে ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু। বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ৬৬ বছরের এক ব্যক্তির। ১০ দিনে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ল ১,১০০ জন। ১ জানুয়ারি থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত যে সংখ্যাটা ছিল ২,৭৯০ জন, আজ ২২ সেপ্টেম্বর তারিখে সেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যাটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৮০২ জন। সল্টলেকের ওই বাসিন্দার নাম পিনাক সরকার। ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। গতকাল রাতে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুর কারণ হিসেবে সিভিয়ার ডেঙ্গি সিন্ড্রোমের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সল্টলেকে এই বছর প্রথম ডেঙ্গুতে মৃত্যু হল সল্টলেকের AE ব্লকের ৭৯১ নাম্বার বাড়ির বাসিন্দা ৬৬ বছরের পিনাক সরকারের। গতকাল রাত ১০টা ১৫ নাগাদ একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসাবে লেখা রয়েছে সিভিয়ার ডেঙ্গি সিন্ড্রোমের কথা। পরিবার সূত্রে খবর, গত মাসের ২৭ তারিখ প্রথম জ্বর আসে। ২৮ তারিখ ভর্তি করা হয় সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। এরপর কিছু সমস্যার কারণে ১৫ তারিখ তাঁকে ভর্তি করা হয় বাইপাসের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ২১ তারিখ রাত ১০টা ১৫ নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে আজ সকালে মৃতের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছয় বিধাননগর পৌরনিগমের চেয়ারম্যান তথা ৩১ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সব্যসাচী দত্ত। সেখানে গিয়ে পৌরনিগমের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমার ওয়ার্ডেই থাকতেন তিনি। মাঝবয়সী। আমাদের সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িত ছিলেন। এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। সব মানুষকেই বার বার করে অনুরোধ করছি। আপনাদেরকেও জানাচ্ছি, নিজের বাড়িটা পরিষ্কার রাখুন এবং পার্শ্ববর্তী বাড়িতে যদি কেউ পরিষ্কার না রাখে দয়া করে অনুরোধ করুন। অনুরোধ কেউ রাখছেন না। এই একটা গলিতে অন্তত ১০-১২ জনের ডেঙ্গি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিউনিসিপাল কর্পোরেশন অ্যাক্টে প্রভিশন আছে। আমি এখনই কমিশনারের সাথে কথা বললাম। আপনি যদি আবর্জনা ময়লা ক্লিয়ার না করেন, তাহলে এফআইআর করে লিগ্যাল একশন নেওয়ার। কিন্তু সেটা কর্পোরেশন নেয় না। উদাসীন। কিছু বললেই বলবে আমার লোক নেই দেখছি। আসি যাই, মাইনে পাই, কাজ করলে ওভারটাইম চাই। আর বলব কিছু? কাজ হলে এরকমভাবে মানুষ মারা যায়? বাড়ির ভিতরে আবর্জনা আছে। সেই আবর্জনা দিনের পর দিন নয়, মাসের পর মাস নয়, বছরের পর বছর ধরে পড়ে আছে! কী করব! আমি কাউন্সিলর। মিউনিসিপাল কর্পোরেশনে একটি কাউন্সিলরের কী ফাংশন আছে? মেয়রকে বলতে হবে। এমআইসি হেলথকে বলতে হবে। এমআইসি হেলথকে বলেছি, সে ডেডবডি ক্যারিং ভ্যান পাঠিয়েছে। আর কমিশনারকেও বলা হয়েছে। মেয়র কোথায় আমি ফোনে পাইনি।’
ওদিকে কলকাতায় আরও এক ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম কল্পনা দত্ত। বয়স ৭৮ বছর। বাড়ি কলকাতা পুরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের রিজেন্ট এস্টেটের আই ব্লকে। গত শুক্রবার থেকে জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। শনিবার রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে ডেঙ্গি পজেটিভ আসে। রবিবার ভর্তি করা হয় আরএন টেগোর হাসপাতালে। গতকাল রাতে সেখানে মারা যান তিনি।