খানিক সাবধান হলেই রুখে দেওয়া যায় ডেঙ্গিকে, জানাচ্ছেন চিকিৎসক সায়ন চক্রবর্তী

বর্ষা এলেই বাড়ে মশার আনাগোনা। প্রতি বছর এই মরশুমে শহর জুড়ে জাঁকিয়ে বসে ডেঙ্গি। খবরের কাগজ খুললেই চোখে পড়ে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর নানা ঘটনা। সাম্প্রতিক কালে সেই ঘটনা আরও বেড়েছে। আচ্ছা, সত্যিই কি ডেঙ্গি মারণ রোগগুলির মধ্যে একটি? কী ভাবে সুস্থ থাকা যায় ডেঙ্গির মরশুমে? কোন নিয়মে হতে পারে এর প্রতিকার? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির আমরি ঢাকুরিয়ার প্রখ্যাত সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ তথা চিকিৎসক সায়ন চক্রবর্তী।

বর্ষার ঠিক পরবর্তী সময়েই মশাবাহিত রোগগুলির প্রকোপ বাড়তে থাকে। যেমন ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া ইত্যাদি। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, “প্রতি বছরের মতো এই বছরেও অনেকগুলি ডেঙ্গির ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন রোগী আমাদের কাছে আসছেন। কিছু ক্ষেত্রে রোগের প্রকোপ অত্যন্ত বেশি। এই সময় আমাদের প্রত্যেককে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে — তা হল কী ভাবে সুস্থ থাকা যায়।”

চিকিৎসকের মতে, মশার কামড় রোধ করে দিলেই ডেঙ্গির থেকে বাঁচা সম্ভব। এবং সেটি করতে হবে মশার উৎসস্থল বিনাশ করে। জমা জলে মশা জন্মায়। তাই বাড়ির আশেপাশের টায়ার, টব, খালি বাক্স, সহ যে যে জায়গাগুলিতে মশা জন্মাতে পারে, সেই জায়গাগুলিকে পরিষ্কার করে রাখা অত্যন্ত জরুরি। তারই সঙ্গে মশা যাতে কামড়াতে না পারে সেই ব্যবস্থাও করতে হবে। যেমন ফুল-হাতা জামা পরে থাকা, রাতে মশারি টাঙানো ইত্যাদি। প্রয়োজনে লিক্যুইড রেপেলেন্ট ব্যবহার করতে হবে। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, এই দু’টি বিষয়ে খেয়াল রাখলেই এই রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।

এ ছাড়াও ডেঙ্গি প্রতিরোধে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ করে কর্পোরেশন। যেমন ধোঁয়া, স্মগিং ইত্যাদি। চিকিৎসক সায়ন চক্রবর্তীর জানাচ্ছেন, “ডেঙ্গি ঠেকাতে যে কোনও পরিস্থিতিতে প্রত্যেকের একসঙ্গে কাজ করা উচিত। যেমন, পাশের বাড়ির জমা জলে মশা হলে, সেই মশার কামড়ে আপনারও ডেঙ্গি হতে পারে। অতএব, নিজের চারিপাশ পরিচ্ছন্ন রাখা বাঞ্ছনীয়।”

ডেঙ্গির প্রধান লক্ষণ হল, জ্বর, গা-হাত-পা ব্যথা, মাথা ব্যথা, শরীর দুর্বল ইত্যাদি। এই উপসর্গের কোনও একটি দেখতে পেলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন; অবশ্যই রক্তপরীক্ষা করান। এই বিষয়গুলির দিকে একটু সঠিকভাবে খেয়াল রাখলেই আমরা ডেঙ্গির মতো রোগকে রুখে দিতে পারব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.