রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি ক্রমশ উদ্বেগজনক হচ্ছে। আক্রান্ত যেমন বাড়ছে, তেমনই মৃতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার মধ্যে কমবয়সিদের সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। গত ৫ অক্টোবরও পনেরো বছরের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে, বেসরকারি সূত্রে রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা হল ৫৮। যদিও এখনও পরিসংখ্যানের বিষয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
জানা যাচ্ছে, মৃত কিশোরের নাম রনি দেবনাথ। নদিয়ার গাংনাপুর থানার অন্তর্গত পশ্চিম গোপীনগরের বাসিন্দা রনির একটানা জ্বর ছিল বলে পরিবার সূত্রের খবর। গত ৩ অক্টোবর ডেঙ্গি পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে তার। প্রথমে রনিকে চাকদহ হাসপাতালে এবং পরে বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরে তাকে বারাসত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিডনির অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকায় ৪ অক্টোবর ভর্তি করা হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। প্লেটলেট নামতে থাকায় সিসিইউ-তে ভর্তি রাখা হয়েছিল তাকে। ৫ অক্টোবর সকালে মৃত্যু হয় তার। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল সূত্রের খবর, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ায় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রের।
বেসরকারি সূত্রের খবর, গত জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার জন রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গি পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হতে শুরু হওয়ার পরে গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রশাসনের তরফে একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু তার পরেও অধিকাংশ পুরসভা হেল্পলাইন চালু করতে পারেনি। ৬৫ বছরের বেশি বয়সি ভেক্টর কন্ট্রোল কর্মীদের বদলে নতুন কর্মী নিয়োগের কাজও এখনও হয়নি। অবিলম্বে এই সব খামতি শুধরে নিতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। আগামী ১১ অক্টোবর প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে দু’টি বৈঠক হওয়ার কথাও রয়েছে।
পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে আরও গতি আনতে ও পুর এলাকায় বাড়ি বাড়ি নজরদারি চালাতে ১৭০৫৩টি দল তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ৩৪১০৬ জন কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। সুপারভাইজ়ার নিয়োগ হয়েছে ৩৭৫১ জন। কম্পিউটারে তথ্য তুলতে ৮৫৮ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। ১২৮টি পুর এলাকায় ৬৯১৬টি ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ দল গঠন হয়েছে। অন্য দিকে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও একটি পর্যালোচনা বৈঠক করেছে। ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীকে কোন পর্যায়ে রেফার করা হবে, সে বিষয়টিও অতি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য সমস্ত চিকিৎসকদের জানানো হয়েছে।