পুজোর মরসুমেই ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস জারি করল আলিপুর আবহাওয়া অফিস। নবমী থেকে দক্ষিণবঙ্গের কোনও জেলা ঝড়বিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি, আবার কোনও কোনও জেলা হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিতে ভিজতে পারে বলেও পূর্বাভাস। শনিবার রাতে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হয়েছিল। ২৪ ঘণ্টা পর তার অবস্থান দিঘার দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ৫৬০ কিলোমিটার দূরে। বঙ্গোপসাগরের মধ্য-পশ্চিম দিক থেকে আসা নিম্নচাপটি রবিবার বিকেলের দিকে ১৭ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগ নিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় এই গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। সোমবার সকালে এই ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে বাংলাদেশ উপকূলের খেপুপাড়া এবং চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী এলাকার দিকে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব তিন দিন বজায় থাকতে পারে। বুধবার বিকেল নাগাদ ঘূর্ণিঝড় শক্তি হারিয়ে আবার গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলে হাওয়া দফতরের পূর্বাভাস।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বর্তমানে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপের কারণে পুজোর মধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নিম্নচাপের জেরে সোমবার থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে কলকাতা-সহ পাঁচ জেলায়। নবমীর দিন কলকাতার পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া এবং হুগলি জেলার বিক্ষিপ্ত এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কয়েকটি জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা।
দশমীতে ঠাকুরের বিসর্জনের দিনেও বৃষ্টিতে ভিজতে পারে দক্ষিণের কয়েকটি জেলা। কলকাতা-সহ হাওড়া এবং হুগলি জেলার বিক্ষিপ্ত এলাকার পাশাপাশি উপকূলের কাছাকাছি পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কয়েকটি এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। তা ছাড়া দক্ষিণের অন্য জেলাগুলিতেও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর হাওয়া অফিস।
গভীর নিম্নচাপের ফলে বৃষ্টি হতে পারে একাদশীতেও। পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিক্ষিপ্ত এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। দক্ষিণের বিভিন্ন জেলাগুলিও হালকা বৃষ্টিতে ভিজতে পারে। মঙ্গল এবং বুধবার ঝোড়ো হাওয়া এবং গভীর নিম্নচাপের ফলে সমুদ্র উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে কারণে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রের কাছে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে কলকাতার আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে। দু-’এক পশলা বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। রবিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিক। রবিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার তুলনায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। সোমবার কলকাতার সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ৩১ ডিগ্রি এবং ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে থাকতে পারে।