তিন আফগান ক্রিকেটারের মৃত্যুর পর সে দেশের তালিবান সরকারকে সতর্ক করে দিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। আফগান মুলুকে সক্রিয় জঙ্গিদের সামলাতে বললেন। হুঁশিয়ারি দিয়ে জানালেন, অন্যথায় কঠোর পদক্ষেপ করা হবে। একই সঙ্গে গত মে মাসের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রসঙ্গ টেনে ভারতকেও বার্তা দিয়েছেন মুনির।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের অ্যাবটাবাদে সে দেশের সেনার একটি অনুষ্ঠানে শনিবার যোগ দিয়েছিলেন মুনির। সেখান থেকে থেকে আফগানিস্তানের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘শান্তি আর অশান্তির মধ্যে থেকে যে কোনও একটা বেছে নাও। আফগানিস্তানের মাটি থেকে যে জঙ্গিরা কাজ করছে, পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা উচিত তালিবান সরকারের। আফগানিস্তানের মাটি যারা ব্যবহার করছে, তাদের ধুলোয় মিশিয়ে দিতে হবে।’’
ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুনির বলেছেন, ‘‘ভারতের সামরিক নেতৃত্বকে আমি সাবধানে থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। পারমাণবিক পরিবেশে যুদ্ধের কোনও জায়গা নেই। আপনাদের কোনও মন্তব্যেই আমরা ভয় পাব না। সামান্য উস্কানিতেও কিন্তু চূড়ান্ত জবাব দেব, দ্বিধা করব না।’’ মুনিরের দাবি, এর পর কোনও বিপর্যয় এলে তার দায় ভারতের। তাঁর কথায়, ‘‘নতুন করে আবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনও উত্তেজনা তৈরি হলে পাকিস্তান কী জবাব দেবে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারছে না।’’
উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্ত উত্তপ্ত। বুধবার দুই দেশের মধ্যে ৪৮ ঘণ্টার সংঘর্ষবিরতি ঘোষিত হয়েছিল। শুক্রবার তার মেয়াদ শেষের আগেই পাকিস্তান আবার আফগান সীমান্তে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তাতেই মৃত্যু হয়েছে তিন তরুণ ক্রিকেটার-সহ মোট ১০ জনের। এই হামলার প্রতিবাদে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আগামী নভেম্বর মাসে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজ় থেকে দল তুলে নিয়েছে। আফগান ক্রিকেটারেরাও প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। কাবুলের তালিবান সরকার পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে কড়া জবাবের বার্তা দিয়েছে।
আফগানদের সঙ্গে সংঘর্ষেও ভারতকে বার বার টেনে এনেছে পাকিস্তান। তাদের দাবি, ভারতের মদতে এবং উস্কানিতে পাক সীমান্তে হামলা চালাচ্ছে কাবুল। দিল্লির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তালিবান কাজ করছে বলে দাবি করেছেন একাধিক পাক মন্ত্রী। নয়াদিল্লি সে সব দাবি উড়িয়ে দিয়েছে আগেই। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, পাক-আফগান পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া পাকিস্তানের কাজ। তা নিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে দোষারোপ করাও তাদের ‘পুরনো অভ্যাস’।
আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা শনিবার কাতারের রাজধানী দোহায় শান্তি-বৈঠকে যোগ দেবেন।